কখনও সাইকেলে, কখনও বা পায়ে হেঁটে ছয় কিলোমিটার দূরের স্কুলে যাতায়াত করতে হয়েছে। কোনও কোনও দিন স্কুলে যেতে হয়েছে খালি পেটেই। এ ভাবে প্রতিকূলতার মধ্যে লড়াই করে সিমলা মাজুরা আমডিহা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ৭৬ শতাংশের বেশি নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকে পাশ করেছে হুড়ার ফুফুন্দি গ্রামের বিদ্যুৎ হেমব্রম। তার ইচ্ছা বড় হয়ে ডাক্তার হবে। এলাকার গরিব মানুষদের নিখরচায় চিকিৎসা করবে। কিন্তু বিদ্যুতের স্বপ্নের উড়ান গোড়াতেই যেন থমকে যেতে বসেছে। |
বিদ্যুৎ হেমব্রম। —নিজস্ব চিত্র |
তার কথায়, বছর ছয়েক আগে বাবা মারা যান। সামান্য পৈতৃক জমিতে শুধু বর্ষার ধান হয়। তাই বিদ্যুৎ ও তার বোনকে বড় করতে মা সম্বরী হেমব্রম দিনমজুরের কাজ ধরেছেন। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। কেরোসিনের কুপির আলোয় পড়াশোনা করে গিয়েছে বিদ্যুৎ। সে বলছে, “এত দিন টিউশন ছাড়াই পড়াশোনা করেছি। স্কুলের শিক্ষকেরা ও কাকা খুব সাহায্য করেছেন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই।” কিন্তু ছেলের এই স্বপ্ন পূরণ যে কী কঠিন তা বোঝেন মা সম্বরীদেবী।
তিনি বলেন, “কখনও টানা কাজে দূরে যেতে হয়। তখন দুই ভাইবোনের খাওয়া পরার সমস্য হয়। ওদের জন্যই পরিশ্রম করি। কিন্তু সিমলা মাজুরা আমডিহা স্কুলে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। তার খরচ তো কম নয়। তার উপর বই-খাতার খরচও রয়েছে। কোথা থেকে খরচ জোগাড় করব জানি না।” |