দিন আনি দিন খাই পরিবার। সেই প্রতিকূলতাই হয়ত আরও জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল লক্ষ্মণ কর্মকারের। ক্যানিং মহকুমার তালদি মোহন চাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র লক্ষ্মণের এ বছরের মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬০৮।
বাবা হরিপদ কর্মকার পেশায় কামার। মা সবিতা কর্মকার সাধারণ গৃহবধূ। স্থানীয় উত্তর তালদির একচিলতে ঘরে বেড়ে ওঠা লক্ষ্মণের। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবথেকে ছোট সে। পরীক্ষার আগে দু’জন গৃহশিক্ষকের সাহায্য নেওয়া লক্ষ্মণ দিনে ৭-৮ ঘণ্টা পড়াশুনার মাঝে সময় পেলেই বাবাকে কাজে সাহায্য করত। সবিতাদেবী বলেন, “অভাবের সংসার। সেটা ছেলে বোঝে।” আর্থিক প্রতিকূলতা নিয়েই বড় হতে থাকা লক্ষ্মণ তাই দুর্দান্ত নম্বর পাওয়ার পরেও বেশ নির্বিকার। আপেক্ষ ঝরে পড়ে তার গলায়, “চার ভাই-বোনের লেখাপড়ায় খরচ চালাতে বাবাকে হিমশিম খেতে হয়। স্বপ্ন থাকলেও তাই ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সামর্থ্য আমার নেই। কোনও মতে একটা ভাল সরকারি চাকরি পেলে বাবার পাশে দাঁড়াতে পারব।” |
তালদিরই সুরবালা স্কুলের ছাত্রী চৈতালি বসু মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬২৩। চৈতালির বাবা গৌতম বসু পেশায় শ্রমিক। মা সন্ধ্যা বসু কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। অভাবের সংসারে ছিল না কোনও গৃহশিক্ষক। তবে পরীক্ষার আগে তিনজন শিক্ষক সাহায্য করেছিলেন চৈতালিকে। গল্পের বই পড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে ছবি আঁকতে পছন্দ করে সে। স্বপ্ন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট হওয়ার। |