চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফের বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ফেরার পথে বিরোধী প্রার্থীদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সিপিএমের একটি কার্যালয়েও হামলা চালানো হয়। হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার মনোনয়নপত্র তোলার প্রথম দিনই আরাবুল ইসলামের নেতৃত্বে ভাঙড়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বামপ্রার্থীদের মেরে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাঙড়-২ ব্লক অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীরা। ব্লক অফিস থেকে বেরোতেই আরাবুলের অনুগামীরা তাঁদের রাস্তায় ফেলে মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে লাঠি চালায় পরিস্থিতি সামলায়। তত ক্ষণে অবশ্য ব্লক অফিসের কাছেই সিপিএমের একটি কার্যালয়েও ইট-পাটকেল ছুড়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ সেখানেও যায়। হামলাকারীদের এক জন তার কাছে থাকা রিভলভার পাশের খালে ফেলে দেয়। পুলিশ পরে ডুবুরি নামিয়ে সেই চার রাউন্ড গুলি-সহ সেই রিভলভারটি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে।
মনোনয়নপত্র তোলা নিয়ে যে জায়গায় বুধবারই গোলমাল হয়েছে, সেখানে এ দিন বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক অফিসের সামনে ছ’জন পুলিশ মোতায়েন ছিল। গোলমালের খবর পেতেই ভাঙড় থানা থেকে পুলিশ এসে ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার সময়ে গোলমাল এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক নারায়ণস্বরূপ নিগম। তিনি বলেন, “ব্লক অফিসের বাইরে ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। তা ছাড়া, মোবাইল ক্যামেরা ভ্যানও প্রতিটি ব্লকে ঘুরবে।”
কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের হামলায় তাদের দুই প্রার্থী গুরুতর জখম হন। এ দিনের ঘটনা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “ওরা (তৃণমূল) গায়ের জোরে পঞ্চায়েত ভোটে জিততে চাইছে। আমি ভাঙড়ের ঘটনা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।” অন্য দিকে, তাদের তিন প্রার্থী জখম হয়েছে দাবি করে সিপিএম বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বলেন, “ওরা (তৃণমূল) পঞ্চায়েত ভোটে হারার ভয়েই এ সব শুরু করেছে। প্রার্থীদের মারধর করা ছাড়াও আমাদের কার্যালয়েও হামলা করছে।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। ধৃতেরাও কেউ তাঁদের দলের নয় দাবি করে আরাবুল বলেন, “আমি এ দিন ব্লক অফিসের ত্রিসীমানায় ছিলাম না। অযথা আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার কোনও অনুগামী নেই। এটা চক্রান্ত। বিরোধীদের উপরে আমাদের কেউ হামলা করেনি।” |