|
|
|
|
|
টোলগে নামে একটা সাদা
হাতি
এত দিন পুষছিল মোহনবাগান
চুনী গোস্বামী |
|
কাকতালীয় হলেও এটা ঘটনা, ইস্টবেঙ্গল থেকে মোহনবাগানে খেলতে আসা বেশির ভাগ ফুটবলার কখনও সাফ্যলের মুখ দেখে না। সুধীর কর্মকার, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, সমরেশ চৌধুরী, পরিমল দে, সুভাষ ভৌমিক, সুকুমার সমাজপতি... অনেক বড় নাম পারেনি। টোলগেও পারল না। ব্যতিক্রম বোধহয় শুধু গৌতম সরকার। তবে ব্যতিক্রম তো নিয়মকেই প্রতিষ্ঠিত করে।
তবে সত্তরের দশকের যে সব ফুটবলারের নাম নিলাম, তাদের সঙ্গে টোলগের তুলনা করছি ভাবলে ভুল হবে। আগেও বলেছিলাম, এখনও বলছি টোলগেকে আমি ফুটবলারই মনে করি না। ও এক জন ভাল স্কোরার হতে পারে। সেটাও মাঝে-মধ্যে। ভাল ফুটবলার হওয়ার যোগ্যতা নেই। হবেও না।
ইস্টবেঙ্গলে ওর প্রথম বছরের পারফরম্যান্স দেখে দেড় কোটি টাকা খরচ করে মোহনবাগান ওকে জামাই আদর করে নিয়ে এসেছিল। পরিবর্তে টোলগের অবদন কী? শূন্য। গুরুত্বপূর্ণ গোল করা তো দূরে থাক, এক বছরে ফিটনেস-গ্রাফ পড়তে পড়তে এখন প্রায় খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। কোমর ভারী হতে থাকল আর পাল্লা দিয়ে গতি কমতে লাগল। আমার মনে হয়, টোলগে নিজেকে মোহনবাগানে অপরিহার্য ভেবে বসেছিল। যা করবে সব মাফ। এক বছর আগে মোহনবাগান কর্তারা বুঝতে পারলে ক্লাবের এত বড় ক্ষতি হত না। জহুরির চোখে ময়লা পড়ে গেলে যা হয়! সব দেখেশুনে আমার খুব আফসোস হচ্ছে।
টোলগে এর পর যে ক্লাবেই খেলুক, কোনও দিন সফল ফুটবলার হতে পারবে না। সেই দক্ষতাই নেই। এক জন স্ট্রাইকারের ধর্ম শুধু গোল করাই নয়। সহযোগীর সঙ্গে বোঝাপড়া রেখে জায়গা বদল করতেও জানতে হবে। ‘ওয়াল’ খেলে পার্টনারকে দিয়েও গোল করাতে হবে। টোলগের মধ্যে এ সব গুণ কোথায়? কখনও-সখনও দু’একটা ম্যাচে গোল করে হিরো হওয়া যায় না। ওকে মোহনবাগানের বাতিল করার কথা শুনে মোটেই আশ্চর্য হয়নি। বরং সিদ্ধান্তটা আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। তাতে এই আর্থিক সঙ্কটের সময় ক্লাবের কিছু টাকা বাঁচানো যেত! ভাল একটা বিদেশি হয়ে যেত। টোলগের আড়ালে আসলে এক মরসুম ধরে একটা সাদা হাতি পুষল মোহনবাগান।
ইস্টবেঙ্গলে টোলগের খেলা আমি দেখিনি। কিন্তু মোহনবাগানে আসার পরে শুরুতেই ওকে দেখে বুঝেছিলাম, ওর দ্বারা কিছু হবে না। যে ফুটবলার ফুটবলের চেয়ে বন্ধু-বান্ধবীদের বেশি গুরুত্ব দেয়, তার ফুটবলার হওয়ার যোগ্যতা নেই। অস্ট্রেলিয়ান হয়েও ওর তেমন পেশাদারিত্ব মনোভাব আছে কি না সন্দেহ! না হলে করিমের মতো কোচ পেয়েও নিজেকে শুধরোতে পারল না! আমার মতে কর্মকর্তা কিংবা কোচিং স্টাফের ব্যর্থতা নেই। ব্যর্থ টোলগে নিজেই। আবারও বলছি, ও যে ক্লাবেই খেলুক না কেন, বড় ফুটবলার হতে পারবে না।
তবে টোলগেকে নিয়ে আমার ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেল বলে খুশি হতে পারছি না। উল্টে ক্ষোভ হচ্ছে। বসে বসে দেড় কোটি টাকা নিয়ে গেল। ‘ওয়েস্টেজ অফ মানি’। |
|
|
|
|
|