জিতলে লক্ষ্য হাওড়া পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সরকার তাঁর হাতে। কিন্তু হাওড়ার মতো শহরের পুরসভা তাঁর হাতে নেই। ফলে হাওড়া শহরের উন্নয়নের কাজের সমস্যা হচ্ছে হলে গত কয়েকদিন ধরেই উপনির্বাচনের প্রচার সভায় অনুযোগ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচার সভা থেকে মমতা ঘোষণা করেছেন, আগামী নভেম্বরে হাওড়া পুরসভার ভোট হবে। আর সেই ভোটে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে হাওড়া শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তুলবেন বলে তিনি জানান। মমতার কথায়, “হাওড়ায় নভেম্বরে পুরসভার ভোট হবে। আমরা ক্ষমতা পেলে সব সাফ সুতরো করে দেব।’’ এর আগে গত সোমবার বালিতে প্রচারে গিয়েও সেখানকার পুরসভা তৃণমূলের হাতে নেই বলে স্থানীয় পুর-পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন। হাওড়া লোকসভার উপনির্বাচনের পরে জেলা পরিষদ এবং হাওড়া ও বালির পুরসভা দখলই যে তাঁর
পরবর্তী লক্ষ্য তা এ দিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।
তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে এ দিন পিলখানায় সভার পরে মমতার নেতৃত্বে ডুমুরজোলা পর্যন্ত পদযাত্রাও হয়। পিলখানার সভায় এ দিন মমতা আবার ইঙ্গিত দেন কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার আসবেনা। হাওড়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সম্প্রাসারণের কাজ বন্ধ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “এই সরকার(ইউপিএ) চলে যাবে। আমাদের সরকার আসবে। তখন ওটা হয়ে যাবে।” এর আগে বালিতে, পাঁচলা বা আন্দুলের প্রচার সভায় যেমন কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন, এ দিন পিলখানার সভাতেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিশেষত, তাঁর সরকারের দু’বছরের কাজ নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “সিপিএমের সরকার ৩৫ বছর রাজত্ব করে বাংলাকে ধ্বংস করে গিয়েছে। বাংলায় ৩৫ বছরের যে আবর্জনা জমেছে তা পরিষ্কার করতে আমাদের ১০ বছর লাগবেই।” |
হাওড়ার উপনির্বাচনে কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি-র ‘অনৈতিক জোট’ হয়েছে বলে অভিযোগ করে মমতা জানান, তিনি ‘মানুষের মহাজোট’ গড়েছেন। তিনি হাওড়ার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের কোনও সমস্যা হলে আমার বাড়িতে একটা চিঠি পাঠিয়ে দেবেন। আমি সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করব।” হাওড়ার লোকসভা ভোটের উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে মমতা অবশ্য পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বিরোধীদের সমালোচনা কেরে তিনি বলেন, “আমরা তো শীতকালে ভোট করাতে চেয়েছিলাম। যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। কিন্তু বিরোধীরা চেষ্টা করেছে ভোট পিছিয়ে দিতে। গরমে, বৃষ্টিতে মানুষের ভোট দিতে কষ্ট হবে। আসলে বিরোধীরা চেয়েছিল মানুষ যাতে ভোট দিতে না যায়। কারণ ওরা জানে ভোটে ওরা পারবে না।’’
এর পরেই পিলখানা থেকে তাঁর নেতৃত্বে বিশাল মিছিল হয়। মিছিলে মমতা ছাড়াও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, সাংসদ সুব্রত বক্সী, সুলতান আহমেদ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক তাপস রায়, প্রমুখ ছিলেন। পিলখানা থেকে বেরিয়ে পঞ্চাননতলা, নরসিংহ দত্ত রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, দালালপুকুর হয়ে মিছিল শেষ হয় ডুমুরজোলায়। ভোটের তিন দিন আগে মিছিলে মানুষের ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতারা।
মিছিল শেষে মুকুলবাবুর মন্তব্য, “মমতাদির হাত ধরেই উন্নয়ন যে সম্ভব তা নিশ্চিত বলেই মিছিলে দলে দলে মানুষ যোগ দিয়েছে।”
|