|
|
|
|
সাগরপারে ঋতুর প্রয়াণে বিহ্বল ব্রিটেনবাসী বন্ধুরাও
শ্রাবণী বসু • লন্ডন |
শোকের ঢেউ তা হলে এত দূরও পাড়ি দিতে পারে।
ভোরেই প্রয়াত হয়েছেন বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ।
তাঁর কলকাতার বাড়িতে ভেঙে পড়েছে গোটা টলিউড। নেমেছে সাধারণ মানুষের ঢলও। শেষযাত্রায় নিজের শহরের মানুষদের পাশে পেয়েছেন ঋতুপর্ণ। পাশে পেয়েছেন টেমস পারের লন্ডনকেও। এ শহরেও তাঁর অগণিত ভক্ত ছড়িয়ে। রয়েছেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মীও। সব মিলিয়ে তীব্র শোকের আঘাত কলকাতা থেকে দীর্ঘ পথ উজিয়ে পৌঁছেছে লন্ডনে।
যেমন সঙ্গীতা দত্ত। লন্ডনের এই চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন ‘চোখের বালি’ ছবিতে। তার পর একের পর এক ছবি‘রেনকোট’, ‘অন্তরমহল’ এবং ‘দ্য লাস্ট লিয়রে’ও কাজ করেন সঙ্গীতা। শুধুমাত্র কাজের সুবাদে তৈরি হওয়া সম্পর্ক থেকে খুব অল্প সময়েই তৈরি হয় আন্তরিক বন্ধুত্ব। স্বাভাবিক ভাবেই সেই বন্ধুর আকস্মিক মুত্যুতে বিহ্বল সঙ্গীতা। বললেন, “আমি বিধ্বস্ত। ঋতুপর্ণ একাধারে ভাই, বন্ধু, সহকর্মী ছিলেন। আমার জানা অন্যতম বুদ্ধিমান ও সৃষ্টিশীল মানুষও ছিলেন তিনি।” যাঁর সঙ্গে গত সপ্তাহেও ব্যোমকেশ ছবির সেটে একটা গোটা দুপুর কাটিয়েছিলেন সঙ্গীতা, সেই বন্ধু আর নেই, মানতেই পারছেন না তিনি।
শোকাহত লন্ডনের একটি চ্যানেলের ডিরেক্টর নাসরিন মুন্নি কবির। তাঁর মতে, “ফর্মুলা-প্রধান জগতে নিজের পথে চলার সাহস দেখিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। ভারতীয় চলচ্চিত্র তাঁর স্বকীয় ভাবনার অভাব নিশ্চয়ই অনুভব করবে।” কবির নিজে জনপ্রিয় তথ্য চিত্রনির্মাতা এবং লেখক। তাঁর মতে, ঋতুপর্ণ নিঃসন্দেহে ‘অন্য রকমের’ পরিচালক। সে কারণেই হয়তো নিজের চ্যানেলে ‘চিত্রাঙ্গদা’ সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নেন কবির। গোটা ব্রিটেনে সেই ছবির প্রতিক্রিয়া ছিল অপ্রত্যাশিত। শুধু সেখানেই নয়, লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবেও ঋতুপর্ণের একাধিক ছবি দেখতে পেয়েছিলেন শহরবাসী। ভালোবাসার শুরুটা সেখান থেকেই।
দু’বছর আগে ‘লন্ডন ইন্ডিয়া’ চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষ্যে এ শহরে এসেছিলেন ঋতুপর্ণ। গর্ডন স্কোয়্যারে উন্মোচন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। কাটিয়েছিলেন বেশ অনেকখানি সময়।
সেই স্মৃতিই এখন হাতড়াচ্ছেন লন্ডনবাসী। আসল মানুষটা যে এখন আক্ষরিক অর্থেই বহু বহু দূরে! |
|
|
|
|
|