|
|
|
|
তারাবাজি |
বৃষ্টি পায়ে পায়ে |
|
আইপিএল সিক্স মানে যদি ‘মশালা’ হয়, আমি নিশ্চিত সবাই তার স্বাদ পেয়েছে। এ বারের আইপিএল তো মাঠ আর মাঠের বাইরে দু’জায়গাতেই সমান ‘হট’।
উষ্ণতা আবহাওয়াতেও। বাবা কলকাতা থেকে ফোন করেছিলেন। বলছিলেন কলকাতার আবহাওয়া এখন কেমন হিল স্টেশনের মতো হয়ে গিয়েছে। আমার বন্ধুরা বলছিল এই সময় ময়দান দিয়ে ড্রাইভ করে যাওয়া সেনসুয়াল। বৃষ্টিভেজা ঘাস বেশ মোহময়।
আমার তো শুনতে শুনতে ঈর্ষা হচ্ছিল। মন চলে যাচ্ছিল ২০০৭-এর ইডেন গার্ডেন্সে। আমার প্রথম লাইভ টেলিভিশন শো। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ। ভীষণ নার্ভাস। কিন্তু কী হল জানেন? ম্যাচটাই হল না। বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেল। আমার মনে আছে, ইরফান পাঠানকে ইন্টারভিউ নেওয়ার ছিল। একেই আমার পা কাঁপছিল। তার ওপর ক্রিকেটারেরা সমানে ইরফানকে টিজ করে যাচ্ছে, ওর ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে বলে! বিশেষ করে ধোনি। ও তো প্রাঙ্কস্টার। এখনও যত বার কারও ইন্টারভিউ নিই, ধোনি ক্যামেরার পিছন থেকে মুখ ভ্যাংচায়। শুধু আমাকে রাগানোর জন্য। খুব কম লোকই জানেন, ধোনি ‘ক্লোজেট ফোটোগ্রাফার’। খুব ভাল ছবি তোলে ও। |
|
‘আমব্রেলা’ হাতে রিহানা |
সে দিন আমি স্কার্ট আর একটা অফ-শোলডার টপ পরেছিলাম। আমি জানতাম না বৃষ্টি নামবে। পোশাকের দিক থেকে আমি তৈরিই ছিলাম। কিন্তু জুতো, একেবারে ভুল। ওই রকম কর্দমাক্ত মাঠ আর আমি পরে আছি ব্যালেরিনা!
বৃষ্টির মধ্যে এর থেকে খারাপ জুতো আর হয় না।
এখন শিখে গিয়েছি। বর্ষাকালে যদি আমাকে স্টেডিয়ামে যেতে হয়, আমি এখন স্যান্ডাল বা পিভিসি জুতো পরবো।
আমার ধারণা, আমরা সবাই নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিই। আর যারা বর্ষাকালে কী পরবেন এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না, তাঁদের জন্য রইল কয়েকটা টিপস:
১) জিন্স একেবারে ওয়ার্ডরোবে তুলে ফেলুন। এই সময়ে ওগুলো শুকানো খুব শক্ত।
২) ফ্লোয়ি স্কার্ট বা লিনেন ট্রাউজার্স পরুন। এগুলো শুকানো সহজ।
৩) লাল, সবুজ, নীলের মতো বোল্ড রং পরুন। আমি যেমন নিয়ন রং পরি। কখনওই প্যাস্টেল শেড পরবেন না।
৪) এই সময় ন্যাচারাল মেক আপই ভাল। মাসকারা গালে নেমে আসুক সেটা তো আর আপনি চান না। ওয়াটারপ্রুফ মেক আপ অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
৫) পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করলে চুল খোলা রাখবেন না। বেঁধে বের হবেন।
৬) কখনওই চামড়ার জুতো পরবেন না বা চামড়ার ব্যাগ নেবেন না। বরং একটা রঙচঙে ছাতা নিন (প্লিজ, বোরিং কালো ছাতাটা নয়)। |
|
|
‘প্যায়ার হুয়া ইকরার হুয়া’ |
‘টিপ টিপ বরসা পানি’ |
|
লোকেরা যদিও বৃষ্টিতে ভিজতে চান, বৃষ্টি পড়লে আমি কিন্তু বাড়িতে থাকতেই পছন্দ করি। অলস ভাবে জানালার পাশে বসে বৃষ্টি পড়া দেখা। বৃষ্টি থেমে গেলে, বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ইলেকট্রিকের তার বেয়ে নেমে আসে। আমার তো ভীষণ রোমান্টিক লাগে। ধূসর মেঘ কেটে গিয়ে বৃষ্টির রুপোলি চমক। আর তখনই আমার লাল মাটির সোঁদা গন্ধ পাই। গানও চালিয়ে দিই। মনে রোম্যান্স। আর মাথায় ঘুরপাক খায় বৃষ্টির গান। এখন তো খুব অল্প হিন্দি ছবিতেই বর্ষার গান থাকে। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে একটু পুরনোপন্থী। আমার পুরনো রোমান্টিক বৃষ্টির গানগুলো বেশ লাগে।
বর্ষাকালে আমার প্লে-লিস্টটা আপনাদের জন্য দিয়ে দিলাম। দেখুন তো, ক’টা আপনার পছন্দের সঙ্গেও মেলে?
১) ‘শ্রী ৪২০’র ‘প্যায়ার হুয়া ইকরার হুয়া’। রাজ কপূর-নার্গিসের এই গানটা আমার ছোটবেলা থেকেই প্রিয়। ওই সাদা-কালো ফ্রেম। সেনসুয়াল কেমিস্ট্রি। কালো ছাতা । আর বৃষ্টির ম্যাজিক। এর থেকে আমার কাছে আর
কিছু রোম্যান্টিক হতেই পারে না।
২) মনে আছে ‘গুরু’র ‘বর্ষো রে মেঘে মেঘা’? গুলজারের কথা আর ঐশ্বর্যার বৃষ্টিভেজা নাচ। এ আর রহমানই পারেন এমন মাদকতা তৈরি করতে।
৩) করিনা কপূরকে তো ইমতিয়াজ আলির ‘জব উই মেট’য়ের ‘তুম সে হি’ গানে খুব ভাল লেগেছে। আর তার ওপর মোহিত চৌহ্বানের গলা। গলার ওই রকম সেনসুয়ালিটি আর প্রীতমের সঙ্গীত... সব সময় আমাকে নেশা ধরিয়ে দেয়।
৪) একটা বর্ষার গান আমি কখনও ভুলতে পারব না। ‘মোহরা’র ‘টিপ টিপ বরসা পানি’। অক্ষয়কুমার আর রবিনার কেমিস্ট্রিতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় পর্দায়। পানি নে সচমুচ আগ লাগা দি!
৫) আর একটা ইংরেজি গান। রিহানার ‘আমব্রেলা’। বন্ধুত্ব নিয়ে একটা মন ভাল করে দেওয়া গান। কথাগুলো এ রকম,“হোয়েন দ্য সান শাইনস, উই উইল শাইন টুগেদার. টোল্ড ইউ আই’ল বি হিয়ার ফরএভার/ সেড আই’ল অলওয়েজ বি আ ফ্রেন্ড/ টুক অ্যান ওথ আই’মা স্টিক ইট আউট টিল দ্য এন্ড।”
৬) শেষে বলব, সব প্রেমিকদের জন্য আমার পছন্দ হল
বি জে টমাসের ‘রেনড্রপস কিপ ফলিং অন মাই হেড’ গানটা। বৃষ্টিভেজা অলস বিকেলে সঙ্গীর সঙ্গে বিছানায় শুয়ে শুনুন ‘বুচ ক্যাসিডি অ্যান্ড সানড্যান্স কিড’য়ের এই গানটা। এই গানটা বেস্ট অরিজিনাল সং-য়ের অস্কারও পেয়েছিল। একটা সারল্য আছে গানটায়। বেঁচে থাকার উদ্যাপন আছে সেখানে। যখনই মনটা একটু ভিজে যায়, তখনই এই লিরিক্সটা শুনতে ভাল লাগে, “দেয়ার’স ওয়ান থিং আই নো/ দ্য ব্লুজ দে সেন্ড টু মি ওন্ট ডিফিট মি/ ইট ওন্ট বি লং টিল হ্যাপিনেস স্টেপস আপ টু গ্রিট মি।” |
|
|
|
|
|