|
|
|
|
ভাগ্য ভাল অমিতাভ বা শাহরুখের ছেলে নই |
স্টারডম তুঙ্গে। তবু মাটিতে পা। আনন্দplus-এর দফতরে
আড্ডায় অকপট রণবীর কপূর। মুখোমুখি সৃজিত মুখোপাধ্যায় |
হ্যালো রণবীর
হাই স্যর। নাইস টু মিট ইউ।
আপনার মতো সুপারস্টারকে দেখে কিন্তু মনে হয় আপনার পা মাটিতেই থাকে। এটা কি আপনার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া? আমি সব সময়ই গ্রাউন্ডেড। আমার পা সব সময় মাটিতেই আছে। তবে হ্যাঁ, আমি আর আমার দিদি, দু’জনেই মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটিয়েছি। বাবা তো সব সময় ব্যস্ত থাকত। মা-র সঙ্গে অনেক খোলাখুলি কথা বলা যায়। বাবা তো খুব রাগী, ভীষণ স্ট্রিক্ট। আসলে আমাদের পরিবার আর-পাঁচটা পরিবারের মতোই। আমি নিজের কাকাদের, দাদুদের, বাবা-মা-র এত উত্থান-পতন দেখেছি যে আমি নিজে থেকেই বাস্তববাদী হয়ে গিয়েছি।
আমরা খুব নরমাল একটা ফ্যামিলি। সব ফ্যামিলির মতোই আমার বাবা-মায়েরও ঝগড়া হয়। আমার ডিওডোরেন্ট শেষ হয়ে গেলে বাবার ডিও ব্যবহার করি আমি। কিন্তু যেহেতু আমাদের পরিবার সিনেমার সঙ্গে যুক্ত, লোকে আমাদের খুব গ্ল্যামারাস মনে করেন। যদিও আদতে আমরা আর পাঁচটা স্বাভাবিক পরিবারের মতো।
বাড়ির সবাই একসঙ্গে ডিনার করেন? দিনের একটা মিল আমরা সবাই একসঙ্গে খাই। আসলে আমার বাবা পারিবারিক মূল্যবোধ সম্পর্কে খুব সচেতন। বাবা সব সময় চায় যাতে পুরো পরিবার একসঙ্গে বসে খায়। দু’বছর আগে একদিন মা আমাকে এসে জিজ্ঞেস করে আমি আলাদা কোনও ফ্ল্যাটে থাকতে চাই কি না? তখন আমার বয়স তিরিশ।
মা কি ওটা বলেছিলেন যাতে আপনি গার্লফ্রেন্ডদের সঙ্গে থাকতে পারেন? হ্যা।ঁ গার্লফ্রেন্ডদের সঙ্গে যাতে থাকতে পারি, নিজের মতন যাতে থাকতে পারি। তবে আমি জানতাম আমি যদি এ রকম করি, বাবা তাতে মোটেও খুশি হবে না। কারণ এ সব ব্যাপারে বাবা ভীষণ ট্র্যাডিশনাল। বাবার সব সময়ই ইচ্ছে যাতে ওদের সঙ্গেই থাকি। ছেলে হিসেবে বাবার এই ইচ্ছেটাকে আমি শ্রদ্ধা করি। তাই বাড়ি ছাড়িনি, ছাড়ব না।
বাবার কথাই যখন উঠল, তখন একটা কথা জিজ্ঞেস করি। ঋষি কপূর কিন্তু হঠাৎ একটার পর একটা ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করছেন। হ্যা।ঁ আজকাল ব্রেকফাস্ট টেবিলে মাঝে মাঝেই দেখি বাবা কাজে বেরোনোর জন্য রেডি হচ্ছে, নিজের সঙ্গে কথা বলছে। দেয়ারস হ্যাপিনেস অন হিজ ফেস। আমার সেটা দেখে খুব ভাল লাগে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে সেই সময়টার কথাও মনে পড়ে, যখন তিরিশ বছর টানা নায়কের চরিত্রে অভিনয় করবার পরেও বাবাকে রাতারাতি চরিত্রাভিনেতা হয়ে যেতে হয়।
একজন হিরোর সব থেকে খারাপ সময় এটা। সেটের সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট মানুষ থেকে আমি জাস্ট সাধারণ একজন অভিনেতা। |
|
ছবি: কৌশিক সরকার |
সেই সময়টা আপনাদের পক্ষে নিশ্চয়ই খুব কঠিন ছিল? সাঙ্ঘাতিক খারাপ সময় ছিল। খুব খিটখিটে হয়ে গিয়েছিল বাবা। আমি তখন কলেজে পড়ি। এ রকম একটা সময় যে-কোনও অভিনেতার জন্য খুব শক্ত, কারণ সে বুঝতে পারে না যে কোথায় যাবে। একজন অভিনেতার তো কোনও অফিস নেই। তখন বাবা তো মাঝে মাঝে আরকে স্টুডিয়োতে চলে যেত। একটা সিনেমাও পরিচালনা করেছিল, যেটা ফ্লপ করল। তার পর বাবা নিজেই ঠিক করল অভিনয়ে ফিরবে।
নিজেই বলত, আই ওয়াজ বর্ন অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর, আই উইল ডাই অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অভিনয় করে যাব। আমি নিজেও এটা বিশ্বাস করি। তুমি যদি স্টার হও তা হলে একটা সময়ের পর শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি অভিনেতা হও তা হলে তুমি কিন্তু সারা জীবন থেকে যাবে।
আর ঋষি কপূর তো একজন অসাধারণ অভিনেতা... হ্যা।ঁ বাবার সব চেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল স্বতঃস্ফূর্ততা। বাবা খুব স্পনটেনিয়াস অ্যাক্টর। কোনও টিপিকাল ম্যানারিজম ছিল না বাবার কোনও দিন। আমার ভাগ্য ভাল যে আমি অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খানের ছেলে নই। কারণ ওঁদের ছেলেরা জীবনে যত বড়ই হোক না কেন, সব সময় বাবার ম্যানারিজমের সঙ্গে তুলনা চলতেই থাকবে। কিন্তু যেহেতু আমার বাবার সেই ম্যানারিজম ব্যাপারগুলো নেই, তাই আমাকে কেউ তুলনা করেনি বাবার সঙ্গে।
বলিউডের আপাতত লেটেস্ট ট্রেন্ড হল সাউথের ছবির রিমেক বানানো। কিন্তু আপনি খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে এই রকম রিমেকে কাজ করতে চান না। কেন? হ্যাঁ, বলেছি। কারণ আমার মনে হয় এটা হিন্দি ছবির লেখকদের পক্ষে বেশ অপমানজনক। মুম্বইতে অনেক ভাল ভাল আইডিয়া নিয়ে কাজ হয়। তা সত্ত্বেও কেন সাউথের রিমেক বানাতে হবে? এই মানসিকতাকে আমি সমর্থন করতে পারি না। আমি নিজেও সাউথের ছবির রিমেকের অংশ হতে চাই না। আমি চাই না, আর কে ফিল্মসের কোনও সিনেমার রিমেক হোক। আমি অমিতাভ বচ্চনের কোনও সিনেমার রিমেকে কাজ করতে চাই না। আমার বাবার কোনও সিনেমার রিমেকেও কাজ করব না কোনও দিন।
আমি কিছুটা সময় পিছিয়ে যেতে চাই। আপনি ‘সাওয়ারিয়া’র মতো ছবি দিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন। তার পর অনেক রকম ছোটখাটো ছবিতে কাজ করতে করতে এই রকম একটা সুপার স্টারডমে পৌঁছলেন। সাধারণত অন্য সুপারস্টারেরা শুরুই করেন প্রথম ছবির সাঙ্ঘাতিক সাফল্য দিয়ে। তার পর তাঁরা ধীরে ধীরে পরীক্ষানিরীক্ষামূলক ছবির দিকে ডানা বিস্তার করেন। আপনার এই জার্নিটা ঠিক কেমন ছিল? সত্যি বলতে কী জানেন, আমি কোনও দিনও প্ল্যান করে কিছু করিনি। স্কুলে কলেজে আমার জায়গাটা গড়পড়তা ছাত্রদের চাইতেও নীচে ছিল। আই ওয়াজ বিলো অ্যাভারেজ। সঞ্জয় লীলা বনশালীকে যখন অ্যাসিস্ট করতে আরম্ভ করলাম তখনই আমার অ্যাক্টিংয়ের প্রতি একটা ইন্টারেস্ট তৈরি হয়। তার আগে আমার একটা ধারণা ছিল অভিনয় হল এমন একটা কাজ যার জন্য কোনও পড়াশোনার দরকার পড়ে না।
কিন্তু যদি আজকের ছবিটা দেখেন, পুরো সমীকরণটাই পাল্টে গিয়েছে। আগামী দিনের সুপারস্টার যিনি হবেন তাঁকে অত্যন্ত বড় মাপের অভিনেতা হতেই হবে। ভাবমূর্তি, কিংবা ব্যক্তিত্ব দিয়ে তিন খান কিংবা হৃতিক রোশনের মতো নায়কেরা একটা সময় দর্শককে আকৃষ্ট করে রাখতেন। এখন সে সব দিন শেষ। ওগুলো আর চলবে না। আজ প্রত্যেকটা প্রথম সারির নায়কের চরিত্রাভিনেতার মতো জোরালো অভিনয় জানতে হয়। তা না জানলে সেই নায়কের দিন শেষ। আমি যে পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছি যেমন শিমিত আমিন, অনুরাগ কাশ্যপ কিংবা অয়ন মুখোপাধ্যায়, আমি কিন্তু তাঁদের নিজস্ব মেধা বা প্রতিভাটা আবিষ্কার করেছিলাম তাঁদের স্ক্রিপ্ট পড়ার আগে। এটা আমার স্ট্রং পয়েন্ট। মানুষের প্রতিভার জোরটা কোথায় সেটা উপলব্ধি করার একটা আশ্চর্য ক্ষমতা আছে আমার।
দিস ইজ আ গ্রেট কোয়ালিটি। তারও পর আর একটা কথা আছে, মিডিয়াই আজকাল স্টার তৈরি করে। আগেকার দিনে সুপারস্টার হতে হলে সারা দেশের মানুষের ভালাবাসা আদায় করে নিতে হত। আজ একটা মাত্র ছবি করেই কেউ কেউ জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে যান, আর তার পরের ছবিটা ফ্লপ করলেই মানুষ তাঁকে ভুলে যায়। এ সবই ঘটছে মিডিয়ার দৌরাত্ম্যে। তবে একটা কথা আমাকে স্বীকার করতেই হবে ‘সাওয়ারিয়া’ থেকে ‘রকেট সিংহ’ থেকে ‘বরফি’ আগাগোড়া আমার এই যাত্রায় মিডিয়ার খুব সহযোগিতা ছিল।
আপনি তো অভিনয় শিখতে নিউ ইয়র্কের লি স্ট্রাসবার্গ ইনস্টিটিউশনে গিয়েছিলেন। আমরা সকলেই মেথড অ্যাক্টিংয়ের গুরুত্ব জানি। সেই অভিজ্ঞতা কেমন? জেনারালাইজ না করে আমি কেবল আমার অভিজ্ঞতার কথা বলতে পারি। মেথড অ্যাক্টিং একেবারে ফালতু একটা জিনিস। মেথড অ্যাক্টিং ইস ক্র্যাপ। আর নিউ ইয়র্কের লি স্ট্রাসবার্গ অ্যাক্টিং স্কুলও অত্যন্ত ওভাররেটেড। নিউ ইয়র্কের ওই ইন্সিটিউশিনে গিয়ে আমার বাইরের পৃথিবীর ব্যাপারে একটা জ্ঞান হয়েছিল। দুনিয়ার নানা দেশের সিনেমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। বাকি আর কোনও লাভ হয়নি। আর কী জানেন, অভিনেতারা হচ্ছে ফিল্মের সব চেয়ে লাকি। সবাই আমাদের পাত্তা দেয়, আমাদের নিয়েই হইচই হয়। কিন্তু আমি জানি আমার এই স্টাারডমটা আমার একার সম্পদ নয়। এর পিছনে বহু মানুষ রয়েছেন। পরিচালক থেকে সিনেমাটোগ্রাফার থেকে হেয়ার ড্রেসার, স্টাইলিস্ট থেকে সংলাপ রচয়িতা, প্রত্যেকের একটা ভূমিকা আছে। ছবিতে শুধু আমাদেরকেই দেখা যায় বলেই মাতামাতি আমাদের নিয়ে।
এ যেন ‘ব্ল্যাক’-এর সেই অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টরের কথা বলছে বলে মনে হচ্ছে যে সিনেমার সেটে কী হয় তার সবটা জানে। সত্যি আমার একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা তো আছেই। তাই আজকের এই নাম যশ, উচ্ছলতা যেমন উপভোগ করি, তেমনই কী থেকে কী হয় সেটাও জানি।
আপনার কেরিয়ার প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আপনি বলছেন মাল্টিস্টারার ছবিতে বা যে সব ছবিতে বহু সংখ্যক শিল্পী অভিনয় করবেন তাতে আপনি কাজ করবেন না। এ পর্যন্ত একটাই এমন তারকাখচিত ছবিতে অভিনয় করেছেন। আর সেটা হল ‘রাজনীতি’। কেন এই সিদ্ধান্ত? এ প্রশ্নের দুটো উত্তর। প্রথমত অনেক স্টার নিয়ে এই ধরনের ছবি আজকাল সে ভাবে হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত এই মুহূতের্র্ আমি ভারতের সব বড় পরিচালকের কাছ থেকে দুর্দান্ত সব লিড রোলের অফার পাচ্ছি। তো, তাই মাল্টিস্টারার ছবিতে অভিনয় করার প্রয়োজনটা কী আমার? তবে যদি আমি ‘জিন্দেগি না মিলেগা দোবারা’ জাতীয় ছবিতে কাজের সুযোগ পাই, অবশ্যই ঝাঁপিয়ে পড়ব।
তো, তার মানে আপনার কোনও মেন্টাল ব্লক নেই? না, একেবারেই নেই।
আপনি তো দুটো শর্ট ফিল্মেও কাজ করেছেন। তার মধ্যে একটা ছবির পরিচালনাও করেছেন। এই ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম মুভমেন্টটাকে আপনি ঠিক কেমন চোখে দেখছেন? আপনি এর অংশীদার হতে চান? না কি প্রচারের আলোয় তৈরি বড় বাজেটের ছবিতেই কাজ করতে চান? স্বার্থপর ভাবেই বলতে হয় আর্কলাইট আমার ভাল লাগে। তবে হ্যাঁ, হলিউডের বহু বড় তারকাই ‘ইন্ডি’ ছবিতে কাজ করছেন। এমনকী ছাত্রদের ছবিতেও বড় তারকারা কাজ করছেন। স্টুডেন্টদের সঙ্গে কাজ করলে অনেক নতুন ট্যালেন্ট আবিষ্কারও করা যায়। কিন্তু ভারতে এমনটা কেউই করছেন না। আমি কিন্তু আমার কেরিয়ারের প্রথম দু’বছর যথেষ্ট অ্যাপ্রোচেবল ছিলাম। মনে পড়ে আমি এক সময় কলকাতায় এসে ফিল্ম স্টুডেন্টদের সঙ্গে দেখা করতাম। তাঁরা আমায় স্ত্রিপ্ট পাঠাতেন।
কিন্তু এটা খুব সত্যি এবং দুঃখজনক, একবার স্টারডমের মধ্যে ঢুকে পড়লে স্টারেরা আর অ্যাপ্রোচেবল থাকেন না। আমারও সেটা হয়েছে। যদিও আজও আমি মনে করি আমি যথেষ্ট অ্যাপ্রোচেবল। লোককে আমার মোবাইল নম্বর দিতেও আপত্তি নেই। কিন্ত হ্যাঁ, সুপারস্টার হয়ে যাওয়ার পরে ব্যাপারটা আর আগের মতন যে নেই সেটা বুঝতে পারি। |
|
|
হাতে প্রিয় ফুটবল ও নতুন ছবির জন্য
দক্ষিণেশ্বরের প্রসাদ। ছবি: কৌশিক সরকার
|
আনন্দplus দফতরে রণবীর কপূর।
ছবি: বিশ্বনাথ বণিক |
|
কিন্তু আপনি তো একেবারে আনকোর নিউকামার অয়ন মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছেন? হ্যাঁ, অয়নই একমাত্র নিউকামার পরিচালক ছিল যার সঙ্গে আমি কাজ করেছি। ওই যে আপনাকে বললাম, স্টারডম বাড়লে আপনি দূরে সরে যাবেনই। এটাই সিনেমার নিয়ম। এই দূরে চলে যাওয়ার জন্যেই আজকে আর নানা ধরনের চিত্রনাট্য পড়ার মতো সময় আমার নেই।
আজকে আমাকে যদি একটা স্ক্রিপ্ট দিয়ে পড়তে বলেন, সেটা আমার পক্ষে বেশ সমস্যার হবে। কারণ আমি এখন তিনটে সিনেমার শু্যটিং করছি। একসঙ্গে তিনটে সিনেমার শু্যটিং করতে করতে নতুন স্ক্রিপ্ট পড়ার কোনও মানে হয় না। অন্তত দুটো সিনেমার কাজ শেষ হওয়ার পরে নতুন স্ক্রিপ্ট পড়া যেতে পারে। তত দিনে আমার কাছে মোটামুটি কুড়িটা স্ক্রিপ্ট জমে যাবে। আমি তার মধ্য থেকেই হয়তো পাঁচটা স্ক্রিপ্ট বেছে নিয়ে কাজ শুরু করব।
আচ্ছা, যখন ‘রকস্টার’য়ের স্ক্রিপ্ট পড়েন তখন কী মনে হয়? এক্সাইটেড লাগে। মনে হয়, স্ক্রিপ্টটা ভীষণ অনেস্ট। আসলে স্যর, আমি না আজকেও নিজেকে সিনেমার একজন মজদুর হিসেবেই ভাবি। স্টুডিয়োয় গিয়ে সেটে পরে থাকা, এর মধ্যে আমি একটা অদ্ভুত মজা পাই।
বাহ! দ্যাটস সুপার্ব... হ্যা।ঁ তবে এর একটা অন্য দিক আছে। আমরা সবাই আজকাল এতটাই স্বার্থপর হয়ে গিয়েছি যে নিজের বাবা-মা, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য সময়টুকুও বের করতে পারি না। আজকে যেমন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতে বসলে আমি ওদের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না। হয়তো ওরা কোনও জোকস বলছে, আমি ঠিক বুঝে উঠতেই পারি না। তবে নিজেকে ভিকটিম ভাবতে চাই না। আমিই তো এ সব বেছে নিয়েছি নিজের জীবনের জন্য।
‘বরফি’র পর আবার কলকাতায় এলেন। কেমন লাগছে? আমাকে কলকাতা সব সময়ই খুব ভাল ট্রিট করে। গত বছর এসেছিলাম ‘বরফির শুটিংয়ের সময়। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় কলকাতার মতো এত সিনেমাটিক শহর ভারতবর্ষেই নেই।
শেষ প্রশ্ন, আপনার যাত্রা শুরু ‘সাওয়ারিয়া’ দিয়ে। সেটা সে রকম ভাবে বক্স অফিসে ক্লিক করেনি। আজকে যদি আপনাকে আর একবার চান্স দেওয়া হয় তা হলে নতুন করে কেরিয়ারটা শুরু করতে চাইবেন? না। ‘সাওয়ারিয়া’ ছবিটা যখন বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ল, বুঝতে পেরেছিলাম আমার হাতে আর খুব বেশি হলে দু’টো ছবি আসবে যাতে আমি নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাব। এটাও বুঝেছিলাম এ রকম একটা ধাক্কার পরে আমাকে আরও অনেক বেশি খাটতে হবে। সেটাই করেছিলাম। তাই তো ‘সাওয়ারিয়া’ আমাকে যা শিখিয়েছে তা আর কোনও ফিল্ম পারেনি। ওটা না হলে আজকের রণবীর কপূর হতেই পারতাম না।
|
বরফিplus |
• আমরা সবাই জানি রণবীর কপূর অসম্ভব ফুটবল ভক্ত। তাই রাজ কপূরের নাতি যে দিন আনন্দবাজার পত্রিকার দফতরে এলেন ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’র প্রচারের জন্য, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে একটি ফুটবল উপহার দেওয়া হয়, যে ফুটবলে এএফসি কাপ খেলা হয়। সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের প্রসাদ এবং নকুড়ের সন্দেশ। “মিষ্টি আমার খাওয়া উচিত নয়, কিন্তু আমরা কপূর, সামনে মিষ্টি দেখলে আর সামলাতে পারি না নিজেদের,” হাসতে হাসতে বলেন রণবীর
• অফিসে আসার আগের দিন মুম্বই থেকে রণবীরের বিশেষ নিরাপত্তা দল অফিসে আসে। রণবীর কোন লিফট দিয়ে উঠবেন, সেই লিফটে ক’জন থাকবেন, কী খাবেন সব কিছু তাঁরা বিস্তারিত ভাবে লিখে রাখেন
• রণবীর যেহেতু একটি বিশেষ কোম্পানির কোল্ড ড্রিঙ্কসের বিজ্ঞাপন করেন, তাঁর সেক্রেটারি অনুরোধ করেন, সেই বিশেষ ব্র্যান্ডের পানীয় যেন টেবিলে থাকে। “অন্য কোনও কোল্ড ড্রিঙ্কস টেবিলে থাকলে রণবীর সেই টেবিলে বসতে পারবেন না,” সাফ জানিয়ে দেন সেক্রেটারি
• সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হওয়ার পর আনন্দবাজার পত্রিকার নিউজ রুম ঘুরে দেখেন রণবীর। সব বিভাগে গিয়ে দেখা করেন কর্মীদের সঙ্গে। বিলোন হাজারো অটোগ্রাফ
• সাক্ষাৎকার শেষে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় তাঁর তিনটি ছবি, ‘অটোগ্রাফ’, ‘বাইশে শ্রাবণ’ আর ‘হেমলক সোসাইটি’-র ডিভিডি তুলে দেন রণবীরের হাতে |
|
|
|
|
|
|