বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্ক
ভোট নিয়ে মামলা হাইকোর্টে
বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্ব এ বার অন্য মোড় নিল। খোদ রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল একপক্ষ। যাঁরা মামলা করেছেন, তৃণমূলের অন্দরে তাঁরা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলেই পরিচিত। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ঘটনা শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূলের নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
মামলা দায়ের হয়েছে মঙ্গলবার। জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (এআরসিএস) তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার মদনমোহন ঘোষ বুধবার বলেন, “বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। কয়েকজন প্রার্থীই মামলা করেছেন। রাজ্য সমবায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। এরপর কমিশন যা নির্দেশ দেবে, সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে।” বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সেনের বক্তব্য, “মামলার কাগজপত্র পেয়েছি। রাজ্য সমবায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তো আমাদের করণীয় কিছু নেই।” আগামী ২ জুন বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। মেটে মনোনয়ন-পর্ব। ১২টি আসনের জন্য ৪৩টি মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছিল। জমা পড়ে ৩১টি। বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের পর থেকেই সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। একদিকে ছিলেন মুকুল রায়ের অনুগামীরা, অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। শুভেন্দু নিজেও প্রার্থী হন। পরিস্থিতি দেখে এক সময় সমঝোতার চেষ্টা হয়েছিল। আলোচনাও শুরু হয়। তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, ২টি আসনে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর জোর লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ভোটারদের কাছে পৌঁছতে দু’পক্ষ প্রচারেও নেমে পড়ে। একপক্ষ প্রচারপত্র ছাপিয়ে বিলি করে। যে প্রচারপত্রে ২টি আসনে শুভেন্দু অধিকারী এবং মধুসূদন গাঁতাইতকে নির্বাচিত করার আবেদন জানানো হয়। প্রচারপত্রে লেখা হয়, এই দু’জনই তৃণমূল মনোনীত প্রার্থী। অন্যপক্ষ অবশ্য প্রচার করেন, মধুসূদনবাবু দল মনোনীত প্রার্থী নন। এই ২টি আসনে শুভেন্দু অধিকারী এবং নারায়ণ সাঁতরাই তৃণমূল মনোনীত প্রার্থী।
মধুসূদনবাবু মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক। দলের অন্দরে শুভেন্দু- অনুগামী বলেই পরিচিত। নারায়ণবাবু নয়াগ্রাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। দলের অন্দরে মুকুল-অনুগামী বলেই পরিচিত। প্রচার-পাল্টা প্রচার যখন জমে উঠেছে, ঠিক তখনই বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় রাজ্য সমবায় নির্বাচন কমিশন। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ। কমিশনের নির্দেশে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না- দেওয়া পর্যন্ত ব্যাঙ্কের নির্বাচন স্থগিত থাকবে। বস্তুত, তৃণমূলেরই একাংশ নেতা চাইছিলেন না পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ব্যাঙ্কের নির্বাচন হোক। বিষয়টি তাঁরা বারেবারে রাজ্য নেতৃত্বের নজরে এনেছেন। দলের অন্দরে এই নেতারা মুকুল-অনুগামী বলেই পরিচিত। এঁদের মতে, ব্যাঙ্কের নির্বাচনে খারাপ ফল হলে তার প্রভাব পঞ্চায়েতেও পড়বে। অন্যদিকে, শুভেন্দু- অনুগামীরা চাইছিলেন, ২ জুনই যেন ব্যাঙ্কের নির্বাচন হয়। শেষমেশ রাজ্য সমবায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা হাইকোর্টের দারস্থ হলেন। যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মধুসূদনবাবুও। রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কেন হাইকোর্টে মামলা? এর ফলে দলের অন্দরের কাজিয়া কী আরও প্রকাশ্যে এল না? প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি এই শিক্ষকের কাছ থেকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাঙ্কেরই এক আধিকারিক বলছিলেন, “আসলে এ ক্ষেত্রে তো উত্তর দেওয়ারও কিছু নেই। যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁরা তৃণমূলের সমর্থক। আবার তৃণমূলই সরকারের ক্ষমতায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই তো মামলা করা হয়েছে।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.