প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা-কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের কাছ থেকে সময়মতো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করলেন অধ্যাপক অমল মুখোপাধ্যায়। ১০ এপ্রিল প্রেসিডেন্সির ঘটনাটি সম্পর্কে তদন্তের দায়িত্ব রাজ্য মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অমলবাবুর হাতে ন্যস্ত করেছিল। অমলবাবু সোমবার তাঁর তদন্ত-রিপোর্ট কমিশনে জমা দিয়েছেন।
১৮ পাতার তদন্ত-রিপোর্টে কী আছে, তা অবশ্য এ দিন জানাতে চাননি প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমলবাবু। তবে দাবি করেছেন, তদন্তে নেমে প্রথমে পুলিশের তরফে কাঙ্খিত সহযোগিতা পাননি। কী রকম?
অমলবাবুর ব্যাখ্যা: “ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কলকাতা পুলিশের চার জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকার ছিল। এ জন্যতাঁদের ৩০ এপ্রিল মানবাধিকার কমিশনের অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। নির্ধারিত দিনে ওঁরা কেউইআসেননি।” পরে অবশ্য তাঁরা কমিশনের অফিসে এসে কথা বলেছেন। “কিন্তু এ জন্য তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিতে দেরি হল।” আক্ষেপ অমলবাবুর।
অমলবাবু তাঁর রিপোর্টের বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে এ দিন বিস্তারিত কিছু জানাননি। শুধু বলেন, “হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল এসএফআই ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। যদিও ওই সময়ে এসএফআইয়ের কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল কি না, ঢিল কে বা কারা ছুড়েছিল, প্রেসিডেন্সি চত্বরে উদ্ধার বর্শাটি (জ্যাভলিন) বাইরে থেকে আনা হয়েছিল কি না, বহিরাগতদের মধ্যে তৃণমূলের নেতৃস্থানীয় কেউ ছিলেন কি না সংবাদ মাধ্যমের এমন যাবতীয় প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “সব রিপোর্টে উল্লেখ করেছি। আপনাদের কিছু বলব না।”
কমিশন এ বার কী করবে? তদন্ত-রিপোর্ট হাতে পেয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “গরমের ছুটি চলছে। ২ জুন পর্যন্ত ছুটি। ৭ জুন কমিশনের সব সদস্য বসে রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
প্রেসিডেন্সিতে হামলার দু’দিন পরে অমলবাবুকে তদন্ত করার আর্জি জানিয়েছিল কমিশন। অমলবাবু জানিয়েছেন, ১৮ এপ্রিল তিনি কাজ শুরু করেন। “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার-সহ চল্লিশজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের দেওয়া তথ্য যাচাই করে ফের কুড়ি জনের বিবৃতি নেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ওই চার পুলিশ-কর্মী। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের সাহায্য নিয়ে ঘটনাটির পুনর্নির্মাণও করা হয়।” বলেন তিনি। রিপোর্ট তৈরিতে সে দিনের ঘটনা সংক্রান্ত বৈদু্যূতিন সংবাদ মাধ্যমের ক্লিপিং ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবিরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অমলবাবু। |