|
|
|
|
 |
ভোটের জন্য বাহিনী চেয়ে
চিঠি
পঞ্জাব, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশকেও
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বাহিনী চেয়ে শুক্রবার আরও তিন রাজ্যকে চিঠি দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পঞ্জাব, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশ। এই তিন রাজ্য থেকে ৫০ কোম্পানি করে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী চাওয়া হয়েছে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর। এর আগে ছত্তীসগঢ়, অসম ও বিহারের কাছে ১০ কোম্পানি করে সশস্ত্র পুলিশ চেয়ে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু সেই রাজ্যগুলি এখনও সবুজসঙ্কেত পাঠায়নি।
সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখনও পরিষ্কার নয়, বাইরের রাজ্য থেকে কত সশস্ত্র পুলিশ পাওয়া যাবে। ফলে যথেষ্ট সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনী পাওয়া না গেলে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী অতিস্পর্শকাতর ও স্পর্শকাতর সব বুথে নির্দিষ্ট সংখ্যায় সশস্ত্র পুলিশ দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর এখনও সংশয়ে। কমিশন চায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকেই অন্তত ৩০০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হোক।
যদিও পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কত নিরাপত্তারক্ষী রাজ্য সংগ্রহ করতে পারছে, আগামী সপ্তাহের আগে তা পরিষ্কার হবে না বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) বাণীব্রত বসু। এ দিন মহাকরণে তিনি বলেন, “কোন রাজ্য থেকে কত কোম্পানি পুলিশ পাওয়া যাবে তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। কলকাতা পুলিশের কাছে চাওয়া হয়েছে ১০ হাজার পুলিশ। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট বুথ ৫৭ হাজার। এর মধ্যে অতি-স্পর্শকাতর বুথ ২৩ হাজারের বেশি। স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ১৬ হাজারের মতো। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্য পুলিশের মোট সংখ্যা ৬৮ হাজার। এর মধ্যে ১১ হাজার সশস্ত্র পুলিশ (ইএফআর এবং এসএপি মিলে ৯১৬৩, স্ট্রাকো ১৩৫৫ এবং র্যাফ ৩৮৪)। রাজ্য পুলিশের যে বাহিনী রয়েছে তার মধ্যে ৩৩৩ জন ডিএসপি, ৮৪০ জন ইনস্পেক্টর, ১২,৯১২ জন সাব-ইনস্পেক্টর এবং এএসআই, কনস্টেবল ৪৮,০৮৫ জন, ১,৭৩৪ জন মহিলা কনস্টেবল, ১২,৫৭৪ হোমগার্ড এবং ৫,২৬৪ এনভিএফ কর্মী রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা বলেন, “যেখানে যে দিন ভোট হবে সেখানকার সব থানা-ফাঁড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ৮০% পুলিশ তুলে নিয়ে ভোটের কাজে লাগান হবে।” ওই কর্তার দাবি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকে পুলিশ দিয়ে ভোট এ রাজ্যে কখনও হয়নি।
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বেহালায় এক জনসভায় অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। তবে এখনও কমিশনের উপরে তাঁদের আস্থা রয়েছে বলে জানিয়েও সুব্রতবাবুর মন্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের এখনও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।”
এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন বামফ্রন্টের প্রতিনিধিরা। পরে সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, ২ জুন হাওড়ায় লোকসভা উপনির্বাচনের পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়াও শুরু হবে। এর ফলে নানা জটিলতা তৈরি হবে বলে রবীনবাবুদের আশঙ্কা। তাঁর বক্তব্য, লোকসভা উপনির্বাচনের কারণে হাওড়ার জেলাশাসক কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবেন। আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের কারণে তাঁকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালন করতে হবে। এতে প্রার্থীদেরও নানা সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
বিজেপি মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই কমিশনের উচিত, পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিশ পাওয়ার বিষয়টি সরকারের কাছ থেকে নিশ্চিত ভাবে জেনে নেওয়া। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের বক্তব্য, “আদালতের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাতে ভোট হয়, তা কমিশনের দেখা উচিত। কমিশন রাজ্য সরকারের থেকে জেনে নিক, কোথা থেকে সরকার সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবস্থা করবে। কারণ, ভোটে প্রচুর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে এবং তার দায় কমিশনকেই নিতে হবে।”
নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই আজ, শনিবার থেকে পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
|
পুরনো খবর: বাহিনী-জটেই পিছোল ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি |
|
|
 |
|
|