‘অপহরণ’ নয়, প্রেমিকের সঙ্গে নিজেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল সে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বনগাঁর জয়ন্তীপুর থেকে উদ্ধারের পর এমনটাই পুলিশকে জানিয়েছে অপহৃত নাবালিকা।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার গাইঘাটার মরালডাঙা গ্রামে চার যুবক মোটর সাইকেলে করে আসে এবং ওই নাবালিকার বাড়িতে ঢুকে তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণকারীদের বাধা দিতে গিয়ে তাদের হাতে প্রহৃত হন ওই নাবালিকার বাবা জামির মণ্ডল। দিদিকে অপহরণে বাধা দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় তার তেরো বছরের ভাই। নাবালিকার বাবা থানায় অপহরণের অভিযোগ করলে পুলিশও অপহরণের মামলা রুজু করেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি নাইনএমএম পিস্তল ও ৪ রাউণ্ড গুলি।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই নাবালিকার বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি প্রেমপত্র উদ্ধার করে। চিঠির সূত্র ধরেই পুলিশের অনুমান ছিল, ওই নাবালিকার সম্মতিক্রমেই তার প্রেমিক দলবল নিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইলের মাধ্যমে বনগাঁর জয়ন্তীপুরের বাসিন্দা ইছা মণ্ডল নামে এক যুবকের সঙ্গে নাবালিকার পরিচয় হয়। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই তার প্রেমিক তার সঙ্গে দেখা করত। এমনকী ঘটনার দিনও সে তার প্রেমিককে ফোন করে বাড়িতে ডেকে আনে।
কিন্তু কেন এরকম করল ওই নাবালিকা?
তদন্তকারী অফিসারদের কাছে নাবালিকা জানিয়েছে, তার অমতে পরিবারের তরফে গাইঘাটার জলেশ্বর এলাকার এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। সে তার আপত্তির কথা বাবা-মাকে জানিয়েছিল। কিন্তু বাবা মা তাতে কান না দেওয়ায় সে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। সে আরও জানায়, বাবা-মার কাছে নয়, সে শ্বশুরবাড়িতে ফিরতেই আগ্রহী।
শুক্রবার থানায় এসে বাবা-মা নাবালিকাকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে রাজি হয়নি। এ দিন ওই নাবালিকাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই নাবালিকাকে মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, ইছার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
|