ঝড়বৃষ্টির কারণে এবং বজ্রপাতে শুক্রবার বিকেলে দুই জেলার দু’টি এলাকায় মৃত্যু হল চার জনের। জখম হন তিন মহিলা-সহ চার জন।
এ দিন বিকেলে হুগলির পাণ্ডুয়ার গোপালনগর-রামেশ্বরপুর পঞ্চায়েতের দমদমা গ্রামের বাসিন্দা বাসন্তী মালিক (৩৬) বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে হাঁস নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ওই সময়েই পঞ্চায়েতেরই ডাবরা গ্রামের বাসিন্দা সুনীল বাউল দাস (৪৪) মাঠ থেকে ফিরছিলেন। বজ্রাঘাতে তিনিও মারা যান। একই ভাবে মৃত্যু হয় কাটাগড়ের বাসিন্দা গণেশ মালিকেরও (৩২)। ঝড় উঠেছে দেখে তিনিও খেত থেকে ফিরছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। দুর্ঘটনার পরে তিন জনকেই স্থানীয় বাসিন্দারা পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। অন্য দিকে, তোরগ্রাম-পাঁচঘড়া পঞ্চায়েতের নিয়াল-ন’পাড়ার এক যুবক বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাঁকে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টি শুরু হয় বনগাঁ মহকুমা জুড়ে। একই দুর্যোগ হয় হাবরা-অশোকনগরেও। গাছ উপড়ে গিয়ে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে এবং টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপর্যস্ত হয় জনজীবন।
গোপালনগরের হরিপাড়ার বাসিন্দা তরুণ জট (২৪) ওই এলাকারই কানসোনায় একটি প্লাইউড তৈরির কারখানায় শ্রমিকেরা কাজ করতেন। প্রবল ঝড়ে কারখানার একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার ছিড়ে তাঁর গায়ে পড়ে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আকাইপুর, গরিবপুর, নওদা এবং কানসোনাতে বহু গাছপালা উপড়ে যায়। বেশ কিছু বাড়িঘরও ভেঙেছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার ছিঁড়ে যাওয়ায় নষ্ট হয় টেলিফোন সংযোগও। বাগদার কুলিয়া গ্রামে খেতে কাজ করার সময়ে বজ্রপাতে তিন মহিলা জখম হন।
অশোকনগরের খোশদেলপুর, মহাপ্রভু কলোনি এবং হাবরার ব্লক অফিসের সামনে যশোহর রোডে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ায় রাত পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পুলিশ ও বাসিন্দারা গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কারে নামেন। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডও বহু গাছপালা ভেঙেছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। ভেঙেছে বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটিও। |