জ্ঞানেশ্বরী মামলায় সাক্ষ্য দিলেন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট রোহন সিংহ। শুক্রবার মেদিনীপুর আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। মামলার অন্যতম অভিযুক্ত বিমল মাহাতোর গোপন জবানবন্দি নিয়েছিলেন এই বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। তাই তাঁকে সাক্ষী করে সিবিআই। মামলার পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৮ জুলাই। ওই দিন থেকে শুরু হবে চতুর্থ পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ। চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত।
জ্ঞানেশ্বরী মামলাটি চলছে মেদিনীপুরের বিশেষ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম দাসের এজলাসে। চার্জগঠনের পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। এই মামলায় ইতিমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত জ্ঞানেশ্বরীর চালক বিভয়কুমার দাস, সহ-চালক ত্রিলোচন দেবাঙ্গন, গার্ড শ্রীবাসচন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। সাক্ষ্য দিয়েছেন আর এক বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অপূর্বকুমার ঘোষও। তিনি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মনোজ মাহাতো ওরফে বাপির গোপন জবানবন্দি নিয়েছিলেন।
২০১০ সালের ২৭ মে রাতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল আপ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। অভিযোগ, ট্রেনটি আসার আগেই রেল লাইনের একাংশ কেটে ফেলা হয় এবং লাইনের প্যানড্রোল ক্লিপ খুলে ফেলা হয়। ফলে লাইনচ্যুত হয়ে যায় জ্ঞানেশ্বরী। উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ি আবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটির কয়েকটি বগিকে ধাক্কা মারে। মৃত্যু হয় অন্তত ১৫০ জনের। কমবেশি আহত হন প্রায় ২০০ জন। ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তদন্তে নেমে মোট ২৩ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। এরমধ্যে ২১ জন গ্রেফতার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে একমাত্র বিমল মাহাতো জামিনে মুক্ত রয়েছেন। যে ২১ জন ধরে পড়েছে, তার মধ্যে হীরালাল মাহাতো নামে এক অভিযুক্ত ঘটনার সময় নাবালক ছিলেন। ফলে, তাঁর বিচার চলছে জুভেনাইল কোর্টে। বাকি ১৯ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় চার্জগঠন হয়েছে।
জেলবন্দি ১৯ জনকেই শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুরের বিশেষ জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির করা হয়। এসেছিলেন জামিনে মুক্ত বিমল মাহাতোও। শুরুতে মুখবন্ধ করা একটি খাম রোহন সিংহের হাতে তুলে দেন সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বী। জানতে চান, ‘খামটি চিনতে পারছেন?’ উত্তরে রোহনবাবু জানান, ‘হ্যঁা, পারছি। এই খামের মধ্যে বিমল মাহাতোর গোপন জবানবন্দি রয়েছে।’ দু’পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে মুখবন্ধ করা খামটি খোলা হয়। পরে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে বেশ কিছু প্রশ্ন করেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী মৃণাল চৌধুরী। জানতে চান, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন বিমলের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়েছিল, শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার হয়েছিল কি নাতা জবানবন্দি নেওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কি না। উত্তরে রোহনবাবু জানান, এ রকম কিছু জিজ্ঞাসা করেননি তিনি।
|