বেটিং মামলায় ধৃত প্রযোজক অজিত সুরেখার সঙ্গে ভিন্ রাজ্যের বুকিদেরও যোগ ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, অজিত সুরেখার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা ৮টি মোবাইলের কল-লিস্ট জোগাড় করা হয়েছে। তার মধ্যে থেকে বেশ কয়েকটি ভিন্ রাজ্যের নম্বর মিলেছে। এবং সেই নম্বরগুলি স্পট ফিক্সিং মামলার চাঁইদেরই কি না, সেটাই মিলিয়ে দেখছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা। সূত্র পেতে দিল্লি ও মুম্বই পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শ্রীসন্ত-সহ তিন ক্রিকেটার ধরা পড়ার পরে শহরের এক সময়ের নামকরা বুকি জুনিয়র কলকাতা ওরফে দেবেন্দ্র কোঠারির নাম ভেসে উঠেছিল। দুবাইয়ের বেটিং চক্রের সঙ্গে জড়িত জুনিয়র এক সময় কলকাতায় থাকত। এখন তার আস্তানা মুম্বইয়ে হলেও শহরে তার কয়েক জন এজেন্ট রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। সুরেখার সঙ্গে জুনিয়রের সম্পর্ক এখনও না মিললেও সন্দেহটা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
লালবাজারের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, “বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলের কল-লিস্টে এখনও কোনও বিদেশি নম্বরের (আইএসডি) অস্তিত্ব মেলেনি। তবে ভিন্ রাজ্যের নম্বরগুলি কাদের, সে ব্যাপারে খোঁজ করা হচ্ছে।” তাঁর মতে, ওই নম্বরগুলি ভিন্ রাজ্যে বসে থাকা জুনিয়রের শাগরেদদের হতে পারে। পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে ক্রিকেট জুয়ার হদিস পেতে তিনটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এক-একটি দলে ছ’জন করে কর্মী-অফিসার রয়েছেন। আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলিতে শহরে কোথাও ক্রিকেট জুয়ার আড্ডা বসছে কি না, তা জানার জন্য রয়েছে নজরদারিও।
বুধবার রাতে উত্তর কলকাতার গৌরীবাড়ি এলাকা থেকে টলিউডের প্রযোজক অজিত সুরেখা-সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) ও গুন্ডাদমন শাখার অফিসারেরা। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের ২৭ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।
জেরায় পুলিশ জেনেছে, ২০১০ থেকেই অজিত ক্রিকেট জুয়ায় নামেন। গত বিশ্বকাপেও তিনি শহরে জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন। সেই জুয়ায় কারা যোগ দিতেন, তা-ও জানতে চেয়েছে পুলিশ। অজিত শহরের কয়েক জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করেছেন। লালবাজারের এক অফিসারের বক্তব্য, “ওই ব্যবসায়ীরা মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। তাঁরা ক্রিকেট জুয়ায় জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থেই তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না।” একটি সূত্রের দাবি, টলিউডের এক অভিনেতা এবং এক অনামী প্রযোজকের নামও মিলেছে।
তবে পুলিশ এখনই এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
|