হাজরায় সোমবার সিপিএমের পাল্টা সভা করবে তৃণমূল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক হাজরায় আজ, শনিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সভা হবে। সেই সভার পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সভাটি হবে বলে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সভাপতি সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানিয়েছেন। ওই সভায় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর থাকার সম্ভাবনা কম। তবে সাংসদ সুব্রত বক্সি, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, সরকারি দলের মুখ্যসচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রতিনিধি ও নেতারা থাকবেন বলে সচ্চিদানন্দবাবু জানিয়েছেন।
আজ বুদ্ধবাবুর সভা সফল করতে সিপিএমের দক্ষিণ কলকাতার সমস্ত লোকাল কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের কলকাতা জেলার নেতা মানব মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহিদ মিনার বা ব্রিগেড সফল করতে যতটা জোর দিই, ততটা জোর না দিলেও দক্ষিণ কলকাতার পার্টি নেতৃত্বকে বলা হয়েছে, এই সভা সফল করতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “পুলিশকে আমরা কথা দিয়েছি, রাস্তা বন্ধ হবে না। সে কথা মাথায় রেখেই আমরা সমাবেশ করব।” সারদা-কাণ্ডে আদালতের অধীনে সিবিআই তদন্ত, ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্তের মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট হাজরায় সভার ডাক দিয়েছে। বুদ্ধবাবু ছাড়াও বিভিন্ন শরিক দলের নেতারা এই সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যিনি ভোটে লড়েছিলেন, সেই নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের হয়ে বুদ্ধবাবু প্রচারে নেমেছিলেন দেড় বছর আগে। তার পরে আবার তিনি মমতার পাড়ায় সভা করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই সভাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
তবে সিপিএম যেখানে সভা করবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচার করবে, সেখানেই পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত তৃণমূল নেতৃত্ব নিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তেই এ দিন বেহালায় সভা করে তৃণমূল। গত সপ্তাহে বেহালার রায়নগরের মাঠে সভা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। এ দিন সেখানে তার পাল্টা সভা করে তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সূর্যবাবুকে আক্রমণ করেন। পার্থবাবু হুমকি দেন, “বাম আমলে স্বাস্থ্য দফতরে কী কাজ হয়েছে, কার স্ত্রী কোথায় কী ভাবে চাকরি পেয়েছেন, কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালিয়েছেন, তারও তদন্ত হবে।” সিপিএমকে আদর্শচ্যুত বলে উল্লেখ করে পার্থবাবু দাবি করেন, “কোনও নির্দিষ্ট কর্মসূচি নেই সিপিএমের। সে জন্যই বালিশের তলা থেকে দলের পতাকা বার করে এ-দিক ও-দিক ঘুরে ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, কুৎসা চালাচ্ছে।” ক্ষমতায় আসার পরে গত দু’বছরে তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। এই উন্নয়ন কর্মসূচিতে ঈর্ষান্বিত হয়েই বামেরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে ওই সভায় অভিযোগ করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
|