জেএনইউ-ছায়া এ রাজ্যেও, বাতিল সুদীপ্ত-কনভেনশন
সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) তাদের বহিষ্কৃত ইউনিটের লড়াই এ বার এসে পড়ল কলকাতায়! শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গেল পূর্বনির্ধারিত ছাত্র কনভেনশন। যার দাবিই ছিল এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং কলেজ ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র ও শান্তি ফেরানো। জেএনএউ নেতাদের ক্ষোভ, তাঁদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি এড়ানোর জন্যই শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেছে এসএফআই। অথচ কনভেনশনের দাবির মধ্যে প্রথমটি এসএফআইয়েরই আন্দোলন কর্মসূচি!
এসএফআই থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে যাঁরা এসএফআই-জেএনইউ নাম নিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে লড়েছিলেন এবং জিতেছিলেন, তাঁরাই এখন ডিএসএফ নামে নতুন সংগঠন গড়েছেন। কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে আজ, শনিবারের কনভেনশনের (যার উদ্বোধন করার কথা ছিল শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের) জন্য সংগঠনের নেতা জিকো দাশগুপ্ত, ভি লেনিন কুমারেরা শহরে পৌঁছেও গিয়েছেন। কনভেনশন বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা শুনে শুক্রবার তাঁরা একটি পাল্টা চালও দিয়েছেন। একই দাবিতে আগামী বুধবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা নিজেরাই ওই কনভেনশনের আয়োজন করছেন। এবং সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে এসএফআই-সহ বামফ্রন্টের চারটি ছাত্র সংগঠন, নকশালপন্থী আইসা, এসইউসি-র ডিএসও এবং প্রেসিডেন্সির আইসি-কে। জিকোর কথায়, “যে সব দাবিতে কনভেনশন হচ্ছিল, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সব ছাত্র সংগঠনেরই তা সমর্থন করা উচিত। কিন্তু কনভেনশনের উদ্যোক্তা ‘শান্তি, গণতন্ত্র ও সংহতি মঞ্চে’র তরফে জানানো হয়েছে, আমাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে থাকতে সিপিএমের আপত্তি আছে। এটা সঙ্কীর্ণতাবাদী মনোভাব! আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রেসিডেন্সিতে বুধবার কনভেনশন করব এবং শনিবারের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সব সংগঠনকেই সেখানে ডাকব।”
ডিএসএফের অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ এসএফআই নেতৃত্ব। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “উদ্যোক্তারা এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বকে এবং আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমি কেরলে থাকায় ওখানে যেতে পারব না, আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম। উদ্যোক্তারাই আজ জানিয়েছেন, কনভেনশন হচ্ছে না।” এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস বলেছেন, “আমরা উদ্যোক্তা ছিলাম না। আমাদের জানানো হয়েছে, কনভেনশন হচ্ছে না। এতে আমাদের তো কোনও ভূমিকাই নেই। ডিএসএফ বা অন্য কেউ কনভেনশনে ডাকলে যাব কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংগঠনে আলোচনা করতে হবে।”
তবে সিপিএম সূত্রের খবর, অনুষ্ঠানে ডিএসএফের উপস্থিতির কথা জেনেই সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে এসএফআইকে। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, “ডিএসএফ নামের আড়ালে ওখানে যে জেএনএউয়ের বহিষ্কৃত নেতারা আছেন, আগে জানা ছিল না। সম্ভাব্য সব মঞ্চ থেকে যাঁরা পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরল সিপিএমকে নিয়মিত আক্রমণ করে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি উদারতা দেখানোর প্রশ্ন আসে কী ভাবে?” তবে বাম শরিক সংগঠনগুলির একাংশ ডিএসএফের সঙ্গে সহমত।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতে গিয়েই সিপিএম থেকে বহিষ্কৃ হতে হয়েছিল প্রসেনজিৎ বসুকে। তাঁর পিছু পিছুই বহিষ্কার করা হয় জিকো, লেনিনের মতো জেএনইউয়ের নেতাদের। তার পরে ওয়েব-পত্রিকা-সহ বিভিন্ন মাধ্যমে সিপিএমের নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলা অব্যাহত রেখেছেন। এই সমীকরণ মাথায় রেখেই ডিএসএফের সংস্পর্শ এড়িয়ে যেতে চেয়েছে এসএফআই। তাতে যতই সুদীপ্তের নাম জড়িয়ে থাক!

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.