সরকারি ভাতার জন্য প্রশাসনের কর্তাদের দরজায় মাথা ঠুকেছেন। জন প্রতিনিধিদের দরবারে গিয়ে কাকুতি-মিনতি করেছেন। এ ভাবে কেটেছে কয়েক দশক। কিন্তু সরকারি ভাতা মেলেনি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার গাইসালের পাহারবস্তি এলাকার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী সাব্বির আলমের বরাতে। শুধু সাব্বির একা নয়। একই দশা বোন সাঞ্জারা খাতুনের। বৃদ্ধ দিনমজুর বাবার সামান্য রোজগারে অসহায় ওই দুই প্রতিবন্ধী ভাইবোনের দিন কাটছে। তিনি মারা গেলে কী হবে তা ভেবে দিশেহারা হয়েছেন বাবাও।
সাব্বির চলাফেরা করতে পারেন না। কাজ করার শক্তি নেই। প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু ভাতা মেলেনি। ২৬ বছরের সাঞ্জারা লাঠিতে ভর দিয়ে কোনও মতে খুড়িয়ে হাঁটতে পারলেও কানে শুনতে পায় না। মা সরবানু বেগম বলেন, “আমরা না থাকলে ওদের কে দেখবে সেটা ভাবলে ঘুম আসে না। ব্লক প্রশাসন থেকে মহাকুমা প্রশাসন প্রত্যেককে বেশ কয়েকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।” যদিও জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। এটা সমাজকল্যাণ দফতরের আওতাভুক্ত। ওঁরা সমাজকল্যাণ দফতরে লিখিত ভাবে সাহায্যের আবেদন জানালে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সাব্বিররা ৫ ভাইবোন। বড় সাব্বির। দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাই ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে। বাবা মহম্মদ কঠল ৬৫ বছরের বৃদ্ধ। প্রতিবন্ধী দুই ছেলেমেয়ের খরচ চালাতে তাঁকে দিনমজুরির কাজ করতে হয়। সরকারি সাহায্যের আশায় বিভিন্ন দফতরে ঘুরে তিনি যেন হাপিয়ে উঠেছেন। প্রতিবন্ধী কার্ড থাকায় দুই ভাইবোনের দুটি হুইল চেয়ার পেয়েছে। বাবা বলেন, “কতদিন এ ভাবে চলবে জানি না। চোখ বুজলে ছেলেমেয়ে দুটি জলে ভাসবে।” ইসলামপুরের মহকুমা শাসক সমনজিত সেনগুপ্ত বলেন, “ওঁরা কোথায় আবেদন করেছেন জানি না। আমার দফতরে করলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |