কোচবিহারের চারটি সরকারি স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার অর্ধেকেরও বেশি অনুমোদিত পদ দীর্ঘদিন থেকে ফাঁকা পড়ে থাকায় শিক্ষক সংগঠন ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা দফতর সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী না হওয়ায় স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন ঠিক মতো হচ্ছে না। শূন্যপদ পূরণের দাবিতে বুধবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির তরফে জেলাশাসককে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মলয়কান্তি রায় বলেন, “চারটি স্কুলে অনুমোদিত পদের অর্ধেক ফাঁকা। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ৬৭টি শূন্যপদের তালিকা জেলাশাসককে দেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “সমস্যা মেটাতে শূন্যপদের তালিকা স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠানো হবে।”
শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব জানান, জেনকিন্স স্কুল, সুনীতি অ্যাকাডেমি, ইন্দিরা দেবী গার্লস ও কোচবিহার সদর গভর্মেন্ট স্কুলে দীর্ঘদিন থেকে ৬৭টি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পদ ফাঁকা পড়ে আছে। জেনকিন্স স্কুলে তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র রয়েছে ১ হাজার ৩৫০ জন। শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৪৭টি। আছেন ৩০ জন। বাংলা বিষয়ে ২টি, জীববিদ্যায় ২টি, রসায়নে ৩টি, অঙ্ক, ভূগোল, দর্শন ছাড়াও সঙ্গীত ও অঙ্কন বিষয়ে ১টি করে শিক্ষকপদ ফাঁকা পড়ে আছে। সংস্কৃত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের ক্লাস চলছে মাত্র ১ জন শিক্ষক দিয়ে। অথচ শুধু বাংলা বিষয়ে ৫ জন, রসায়ন, অঙ্ক ও জীববিদ্যায় ৪ জন করে শিক্ষক থাকার কথা। ওই স্কুলে শিক্ষাকর্মীদের আরও ৫টি পদ খালি পড়ে রয়েছে। জেনকিন্স স্কুলের প্রধানশিক্ষক কার্তিক পাত্র বলেন, “শূন্যপদ পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। ওই সমস্ত শূন্যপদ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সমস্যা মিটবে না।”
সুনীতি অ্যাকাডেমির ছাত্রী সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন। শিক্ষিকা থাকার কথা ৩৪টি। তার মধ্যে ১৮টি পদ ফাঁকা। ওই তালিকায় প্রধান শিক্ষিকা ছাড়াও বাংলা, অঙ্ক, ভূগোল, কর্মশিক্ষা, অঙ্কন, সঙ্গীত ইত্যাদি বিষয়ে ১টি করে পদ রয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পান্না চক্রবর্তী বলেন, “পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে শিক্ষিকাদের কেউ অসুস্থ হলে বা ছুটি নিলে ক্লাস চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে।” ইন্দিরা দেবী গার্লস হাই স্কুল ও সদর গভর্মেন্ট হাই স্কুলে ২৮টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ১২টি, মহারাণি ইন্দিরা দেবী গার্লস স্কুলের ২৭টি পদের মধ্যে ১১টি পদ ফাঁকা পড়ে আছে বলে অভিযোগ। |