ভবঘুরেদের মানসিক রোগের চিকিৎসা এবং তাদের সুস্থ করে তুলতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে বিশেষ ইউনিট। কেন্দ্রীয় অনুদানে অন্তত ২৫ শয্যার ওই ইউনিট খুলতে ভবন গড়া চলছে। বুধবার শিলিগুড়িতে বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া দিবসের সচেতনতা প্রচার কর্মসূচির সময় এ কথা জানিয়েছেন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয় কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের চিকিৎসকেরা। ওই ইউনিট ছাড়াও মানসিক রোগ বিভাগে ৪০ শয্যার অন্তর্বিভাগ তৈরির কাজও চলছে। মাস তিনেকের মধ্যে ওই অন্তর্বিভাগ এবং বিশেষ ইউনিট চালু হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন।
রুদ্রবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় অর্থে ‘নন ক্রিমিনাল লুনেটিক’ ইউনিট নামে ভবঘুরেদের চিকিৎসার জন্য ওই বিশেষ ইউনিট চালু করা হবে। উত্তরবঙ্গে এটি প্রথম।” এক সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসা বিভাগে ২০ শয্যার অন্তর্বিভাগ ছিল। ওই বিভাগের চিকিৎসক নির্মল বেরা জানান, ১৯৮৭ সালে অন্তর্বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে মানসিক রোগীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়েও নানা সময় অভিযোগ উঠেছে। আবার হাসপাতালের বারান্দায় মানসিক রোগীদের অনেকে রেখে চলে যান। এখনও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালের করিডরে অন্তত ৭ জন ভবঘুরে মানসিক রোগী থাকেন। অনেক সময় চিকিৎসার পর ভাল হলেও বাড়ির লোকেরা রোগীদের ফিরিয়ে নেন না। নির্মলবাবু বলেন, “পরিবারের লোকদের সচেতন এবং সহানুভূতিশীল হওয়া দরকার। বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করালে ওই রোগীদের দ্রুত সমাজের মূলস্রোতে ফেরার সম্ভাবনা থাকে।”
তবে সার্বিকভাবে মানসিক রোগের চিকিৎসকদের সংখ্যা দেশে জুড়েই কম থাকায় সমস্যা রয়েছে বলেই তাঁরা মনে করেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে বাঁকুড়া, মেদনীপুরের মতো উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলাতে মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। তাতে জেলা হাসপাতাল থেকে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের ওই রোগের চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করা হয়। চিকিৎসকের অভাব মিটিয়ে চিকিৎসা পৌঁছে দিতেই সরকারের এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়েছে। |