রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ভিতরে বহির্বিভাগে পথ কুকুরের হামলার ঘটনায় রোগীদের মধ্যে ভালই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে গরম বাড়তেই প্রতিদিন সকালে বহির্বিভাগ খোলা মাত্রই এক দল কুকুর বারান্দা ও করিডোরে ঢুকে পড়ছে। দিনভর দলটি বর্হিবিভাগের যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও করিডর ও বারান্দার পাখার নীচে ঘুমোচ্ছে। রোগীর অভিযোগ, কুকুরের উৎপাতে লাইনে দাঁড়াতে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে চড়া রোদে দাঁড়াচ্ছেন। কুকুর তাড়াতে গেলে সেগুলি দাঁত খিচিয়ে তেড়ে আসছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বহির্বিভাগ চত্বর থেকে কুকুরগুলিকে তাড়ানোর চেষ্টা করায় গত এক সপ্তাহে এক জন তরুণী-সহ তিনজন রোগী জখম হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার করণদিঘির ঝাড়বাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন নামে পেটের রোগে আক্রান্ত এক তরুণীর ডানপায়ে কুকুর আচড় দেয়। গত সোমবার বহির্বিভাগে লাইনে দাঁড়ানোর সময়ে এক কুকুরের লেজে পা দেওয়ায় জ্বরে আক্রান্ত কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা বাবু দেবশর্মা নামে এক যুবকের পায়ে কুকুর আচড় দেয়। রোগীরা আতঙ্কে পালানোর চেষ্টা করলে অন্য কুকুর পায়ের ব্যথায় আক্রান্ত চাকুলিয়ার বাসিন্দা শিবু ঝাঁ নামে এক ব্যক্তির ডান হাঁটুতে আচড় দেয়। |
রোগীর অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরদারির গাফিলতির জেরেই কুকুরের উৎপাত বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “উৎপাত ঠেকাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা কেন করা হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।”
হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “বর্হিবিভাগ থেকে হাসপাতালের কর্মীরা যতটা সম্ভব কুকুর তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। নজরদারিও চালানো হেচ্ছে। কুকুরের উৎপাত ঠেকানো সম্ভব না হলে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।” রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগের নাক, কান, গলা, দাঁত, প্রসূতি, শিশু, চোখ, চর্ম ও সাধারণ রোগ বিভাগের চিকিৎসকদের কাছে প্রতিদিন পাঁচশোরও বেশি রোগী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। এর জন্য টিকিট করে রোগীদের বহির্বিভাগের বারান্দায় ও করিডরে দাঁড়াতে হয়। হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে একই ছবি দেখা গিয়েছে। এদিন ইটাহারের বাসিন্দা প্রসূতি খুকু বিবি ও চাকুলিয়ার বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত যুবক কিরণ ঝাঁ জানান, কুকুরের উৎপাতে হাসপাতালে আতঙ্ক রয়েছে। বর্হিবিভাগে চত্বরে লাইনে দাঁড়াতে পারছি না। বাধ্য হয়ে রোদে বাইরে দাঁড়াতে হচ্ছে। কুকুরগুলিতে তাড়াতে গেলে সেগুলি তেড়ে আসছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেনও চুপচাপ বসে রয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না। |