বন দফতরের তাড়ায় চোরাই কাঠ বোঝাই গাড়ি নিয়ে পালানোর সময়ে একমুখি রাস্তায় ঢুকে পড়ে স্কুটি আরোহী এক মহিলাকে পিষে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রধাননগর থানার চম্পাসারি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। গাড়িটির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরেক স্কুটি আরোহী। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম আরতি সিংহ (৪৫)। তাঁর বাড়ি প্রধাননগরে। তাঁকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জখমের নাম সুপ্রিয়া (রিঙ্কি) গুপ্তা। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রিঙ্কি গুপ্তা নামে জখম এক তরুণীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই ঘটনার পরে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পিকআপ ভ্যানটিকে আটক করে উল্টে ফেলে ভাঙচুর করে জনতা। ঘটনার জন্য বন দফতরকে দায়ী করে পুলিশ কর্তাদের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার কংগ্রেস কাউন্সির শিখা রায় সহ বাসিন্দারা।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “কাঠ সহ পিকআপ ভ্যানটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বন দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয়েছে। চোরাই কাঠ নিয়ে পালানোর সময় একটি গাড়িকে ধাওয়া করতেই বন দফতরের গাড়ি। সঙ্গে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাও দেখতে হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কারও কোনও গাফিলতি থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বন দফতরের কর্তারা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাইছেন না। বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনের ডিএফও ধর্মদেব রাই বলেন, “আমি ছুটিতে আছি। কিছু বলতে পারব না।” |
ক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করে উল্টে ফেলেছে গাড়ি। ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে
চোরাই কাঠ। বুধবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
চম্পাসারি মেন রোড দিনভর জমজমাট থাকে। ওই রাস্তায় দ্রুত গতিতে তুষের বস্তার নিচে চোরাই কাঠ বোঝাই ওই পিক আপ ভ্যান এবং বন দফতরের গাড়িটি ছুটছিল। রাস্তাটি ডিভাইডার দিয়ে ভাগ করা রয়েছে। মিলন মোড় থেকে চম্পাসারি মোড়ের দিকে যাচ্ছিল গাড়ি দুটি। দেবীডাঙ্গার কাছে হঠাৎ করে গাড়িটি ডিভাইডারের ফাঁক গলে উল্টোদিকের রাস্তায় চলতে শুরু করে। সে সময় উল্টো দিক স্কুটারে করে মিলন মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন আরতি দেবী সহ দু’জন। অপর একটি স্কুটারে আরও এক তরুণী ছিলেন। দু’জনকেই ধাক্কা মারে গাড়িটি। আরতি দেবী পড়ে গেলে তাঁর পায়ের উপর দিয়ে গাড়িটি চলে যায়। এক সাইকেল আরোহীও পড়ে যান। এর পরেই পিক ভ্যানটি আটক করে জনতা। চালক পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন শিলিগুড়ির ডিসি (ট্রাফিক) জয়ন্ত পাল।
শিখা রায় বলেন, “ঘটনাস্থলের প্রায় সামনেই চম্পাসারি মোড়। সেখানে সবসময় পুলিশ কর্মীরা থাকেন। তাঁদের যদি বন দফতরের কর্মীরা জানাতেন তা হলে পিকআপ ভ্যানটি ধরা পড়ে। তা না করে জনবহুল রাস্তায় একটি গাড়িকে ধাওয়া করার অর্থই যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটা। এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। বন বিভাগের যে কর্মীরা ওই গাড়িতে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।” এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ওই বন কর্মীদের কাছে ট্রাফিক পুলিশের নম্বর না থাকলে ১০০ ডায়াল করতে পারতেন। তা হলে সহজেই গাড়িটি ধরা যেত।” |