প্রকাশ্য সভায় ৮ জন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুললেন ব্লক নেতৃত্ব। জানিয়ে দিলেন, ওই ৮ জনের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। শাসকদলের কোন্দলের এই ছবি সামনে এসেছে নন্দীগ্রামে।
গত সোমবার তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় বর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে নন্দীগ্রামের সামসাবাদ এলাকার মীরেরবাজারে অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস এক সভার আয়োজন করে। সেখানে যে ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ আনা হয় তাঁরা সকলেই নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা সেখ সুফিয়ানের অনুগামী হিসেবে পরিচিত।
তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পালের দাবি, “ওই ৮ জন দলের কোনও পদে না থেকেও দলের নামে এলাকায় বিভিন্ন কার্যকলাপ চালাচ্ছিলেন। তাই এলাকার মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।” শেখ সুফিয়ানের অবশ্য বক্তব্য, “এই ৮ জনই তৃণমূলের প্রকৃত কর্মী। সামসাবাদ অঞ্চলে পঞ্চায়েতের কাজের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করায় এদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।” বিষয়টি দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন সুফিয়ান। জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এ প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “বিষয়টি জানি। তবে এ নিয়ে মন্তব্য করব না।”
পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চলছে অনেক দিন ধরেই। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের দুই নেতা শেখ সুফিয়ান ও আবু তাহেরের অনুগামীদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষও হয়েছে। গত জানুয়ারিতে সামসাবাদে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিফলেট বিলি করে সুফিয়ান গোষ্ঠী। পাল্টা লিফলেট বিলি করা হয় তাহের অনুগামী পঞ্চায়েত প্রধানের তরফে। এ বার একেবারে সুফিয়ান অনুগামী ৮ জনকে প্রকাশ্যে দলের কেউ নয় বলে ঘোষণা করা হল। এই ৮ জন হলেন সত্য ভুঁইয়া, অতনু জানা, শেখ রেজাউল ইসলাম, শেখ রহিমুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, এজাহার খান, শেখ ফুকুরুদ্দিন ও সুরেশ মণ্ডল। এঁদের মধ্যে অতনু, রহিমুল ও আমিরুল সম্প্রতি সামসাবাদের ধান্যখোলা হাইস্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক চলাকালীন প্রধান শিক্ষক, সম্পাদককে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার হন। এঁরা এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন।
জানা গিয়েছে, সামসাবাদ অঞ্চল তৃণমূলের তরফে এই ৮ জনের বিরুদ্ধে ব্লক নেতৃত্বকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। ব্লক কমিটি সেই প্রস্তাব অনুমোদন করে। তারপরই গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্য সভায় ওই ঘোষণা করা হয়। সভায় ছিলেন বিধায়ক ফিরোজা বিবি, ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের, জেলা পরিষদ সদস্য পীযূষ ভুঁইয়া, সামসাবাদ অঞ্চল সভাপতি শাহ আলম, পঞ্চায়েত প্রধান শেখ খুসনবি প্রমুখ। |