এর পরেও কিন্তু বলব
চেন্নাই অজেয় নয়
চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে মঙ্গলবারের কোয়ালিফায়ার চলাকালীন বেশ কয়েক বার ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। তা সত্ত্বেও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে শেষ পর্যন্ত হারতে হল। সবথেকে হতাশ লাগছে এটা ভেবেই। মানছি আমরা আটচল্লিশ রানে হেরেছি। টি-টোয়েন্টিতে যা বড় হার। কিন্তু শুধু মাত্র হারের ব্যবধানটা দেখলে যে ব্যাপারটা কিছুতেই বোঝা যাবে না, সেটা হল ম্যাচে একটা সময় পর্যন্ত দু’দলের মধ্যে ঠিক কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল! শেষের দিকে দু’টো কারণে ম্যাচটা আমাদের হাতের বাইরে চলে গেল। এক, আস্কিং রেট ক্রমশ বেড়ে চলা। দুই, সেই রান রেট ধাওয়া করতে গিয়ে বড় শট মারার চেষ্টায় পরপর আমাদের অনেকগুলো উইকেট পড়ে যাওয়া।
আমার মতে কোটলায় আমরা ১০-১৫ রান বেশি দিয়ে ফেলি। ওই উইকেটে ১৮০-তে ওদের বেঁধে রাখতে পারলে আদর্শ হত। এমএস-এর টস জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। আমি বলছি না যে টসই হারা আর জেতার মধ্যে ফারাক গড়ে দিয়েছে। কিন্তু কোটলায় প্রথম ব্যাট করতে পারলে মন্দ হত না। তাতে বড় রান তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা যেত। উল্টে চেন্নাই ঠিক সেটাই করে আমাদের চাপে ফেলল। অনেকে হয়তো বলবেন, ১০-১৫ রান বেশি দেওয়া আর এমন কী ব্যাপার। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওই ক’টা রানই শেষ পর্যন্ত বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়।
আসলে ১৯০-এর উপর রান দিয়ে ফেলার পর আমাদের দলের জন্য খুব ভাল ব্যাটিং করাটা জরুরি ছিল। আর তার জন্য দরকার ছিল একটা জমাট শুরু। অবিশ্বাস্য কিছু স্ট্রোক প্লে-র সাহায্যে ডোয়েন স্মিথ ঠিক সেটাই করে দিল। স্মিথির বড় গুণ, এক দিকে যেমন অবলীলায় ইনফিল্ডের মাথার উপর দিয়ে দড়ি পার করে দিতে পারে, তেমনই শক্তিশালী শটে ফিল্ডিংয়ের ফাঁক খুঁজে নিয়ে বল বাউন্ডারিতেও পাঠাতে পারে। অসম্ভব সাবলীল হিটার। কোটলায় নিজের ব্যাটিংয়ের অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপনে আইপিএলের তৃতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরিটা করে গেল। স্মিথি আমাদের জন্য জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে দিয়েছিল। আমাদের শুধু রান তাড়ার বাকি কাজটা সফল ভাবে করে দেখাতে হত। দুর্ভাগ্য, সেটা আমরা পারলাম না।
মুম্বই-বধের পর ড্রেসিংরুমে হালকা মেজাজে ধোনিরা। ছবি টুইটারের
আমরা একেবারে ভুল সময়ে পর পর উইকেটগুলো হারিয়ে বসলাম। কোটলার পিচটা ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ। বাউন্ডারিগুলো ছোট আর আউটফিল্ড তেমনই দ্রুত গতির। কোটলায় তাই শেষ দশ ওভারে ১০০ রান তোলাটা ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকা একটা ব্যাপার। কিন্তু হাতে উইকেট না থাকা আমাদের সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। কোটলায় নিজেদের সেরা ফর্মের থেকে হয়তো ১০-১৫ শতাংশ কম খেলেছি। কিন্তু চেন্নাইয়ের মতো একটা টিমের বিরুদ্ধে ফাইনালে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে তুমি যদি নিজের সেরাটা দিতে না পারো, তা হলে তো তোমাকে ধাক্কা খেতে হবেই।
আইপিএলের প্রতিটা সংস্করণেই চেন্নাই পারফরম্যান্সের জোরে অন্যতম শক্তিশালী দল হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। আইপিএলের ছয় মরসুমে এই নিয়ে পাঁচ বার ফাইনালে উঠল ওরা। এটাই বলে দেয় দলটা ঠিক কতটা ধারাবাহিক এবং প্রতিপক্ষ হিসাবে বাকি টিমগুলোর কাছে কতটা ভয়ঙ্কর! ওদের দলের ভারসাম্য খুব ভাল। ব্যাটিং আর বোলিং দুই বিভাগেই টিমটার গভীরতা রয়েছে। বিশেষ করে নক আউট পর্বে ওদের থেকে বিপজ্জনক টিম আর কেউ নেই। কারণ প্রতিযোগিতার এই পর্যায়ে পৌঁছে অতীতে ওরা বারবার ভাল ফল করে দেখিয়েছে।
এত কিছুর পরেও চেন্নাই সুপার কিংস কিন্তু অজেয় নয়। এ বছরেই হোম আর অ্যাওয়ে, দু’টো ম্যাচেই চেন্নাইকে হারিয়ে সেটা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। আর সে জন্যই দিল্লিতে আসল সময়ে ওদের কাছে হেরে বসায় এতটা হতাশ লাগছে। তবে হারের হতাশা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। নিজেদের নতুন করে তৈরি করতে হবে। সামনেই আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। ফাইনালে ওঠার আরও একটা সুযোগ। আমরা এখন নিজেদের সমস্ত এনার্জি শুক্রবারের ম্যাচের জন্য মজুত করছি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.