|
|
|
|
ধর্ষিতাদের জন্য রাঁচিতে তৈরি হচ্ছে নয়া সহায়তা কেন্দ্র
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
চার বছর আগে, ২০০৯ সালে রেপ ক্রাইসিস সেন্টার তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যকেই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি প্রায় কোথাওই। দিল্লির ধর্ষণের পর একাধিক ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। যার জেরে টনক নড়েছে রাষ্ট্রপতি শাসিত ঝাড়খণ্ডের। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে এ রাজ্যে চালু হতে চলেছে রেপ ক্রাইসিস সেন্টার (আরসিসি)। সেখানে ধর্ষিতার চিকিৎসা থেকে শুরু করে তাঁকে মানসিক নির্ভরতা যোগানো এবং একই সঙ্গে আইনি সহায়তা দেওয়া— সব দায়িত্বই নেবে সরকার। এবং ক্ষতিগ্রস্ত মহিলা একটি সেন্টার থেকেই সব সুবিধা পাবে।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা, তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণের ঘটনার পরে ধর্ষিতাকে আইনি সহায়তার জন্য নিজেকেই পুলিশের কাছে কিংবা আদালতের দরজায় ছুটতে হয়। চিকিৎসার জন্য নিজেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তাঁকে নির্ভরতা দেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। বহু ক্ষেত্রে লজ্জা এড়াতে তিনি তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার সঠিক করে কাউকে বলতে পারেন না। যে কারণে অনেক সময় ধর্ষণের ঘটনার তদন্তও ধাক্কা খায়।
রাঁচি ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইকিয়াট্রি অ্যাণ্ড অ্যালায়েড সায়েন্সস (রিনপাস) এর অধিকর্তা অমূল্যরঞ্জন সিংহের কথায়, “অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণের মতো ঘটনার সামনাসামনি হওয়ার পরে একজন মহিলার পক্ষে আর এত জায়গায় দৌড়ে বেড়ানো মানসিকভাবে সম্ভব হয় না। সেখানেই আরসিসি-র অপরিসীম গুরুত্ব। এই ধরনের রেপ ক্রাইসিস সেন্টারে সব ব্যবস্থাই থাকে। নতুন করে সেই মহিলাকে আর হয়রানির সম্মুখীন হতে হয় না।” পূর্ব ভারতে প্রথম এই ধরনের কোনও সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে বলেই অমূল্যরঞ্জনের দাবি।
রিনপাস ক্যাম্পাসেই ঝাড়খণ্ডের এই রেপ ক্রাইসিসি সেন্টার তৈরি হচ্ছে। দু’সপ্তাহের মধ্যেই তা চালু করা সম্ভব বলে আশা অমূল্যরঞ্জনের। ঝাড়খণ্ড সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ তো রয়েছেই, কিন্তু এই ব্যবস্থার ‘নোডাল অথরিটি’ মহিলা ও সমাজ কল্যাণ বিভাগ। ক্ষতিগ্রস্ত মহিলার কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে আইনি সহায়তা— সমন্বয়ের দায়িত্ব তাদেরই। পশ্চিমি দেশগুলিতে এই ব্যবস্থা প্রচলিত। ১৯৭৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে এক মহিলা ধর্ষিতা হওয়ার পর পরিবার তাঁকে ব্রাত্য করে দেয়। কারও কাছ থেকে নির্ভরতা না পেয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সেই ঘটনার পরে ধর্ষিতাদের অবসাদ কাটানোর ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করে। ক্রমে সেখানে রেপ ট্রিটমেন্ট সেন্টার তৈরি হয়। পরে তা ছড়িয়ে যায় সারা দেশে।
রিনপাস জানাচ্ছে, রেপ ক্রাইসিস সেন্টারে ধর্ষিতার জন্য আপতকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে ব্যবস্থা থাকবে তাঁর অন্যান্য চিকিৎসারও। মানসিক চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি, একই জায়গাতে রাখা হবে আইনি সেল। যেখান থেকে ধর্ষিতা মহিলা আইনি সহায়তা পাবেন। |
|
|
|
|
|