‘বিপজ্জনক’ নোটিস দেওয়া একটি বাড়ির গাড়ি-বারান্দা ভেঙে বুধবার জখম হলেন এক পথচারী। এ দিন দুপুরে বিবাদী বাগের ২৫ নেতাজি সুভাষ রোডের ওই বাড়িতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। অল্পের জন্য বেঁচে যান বাড়িটির নীচের কিছু দোকানের কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, আহতের নাম সৈকত চট্টোপাধ্যায় (৩৭)। বেলেঘাটার বাসিন্দা সৈকতবাবু হাসপাতালে ভর্তি।
বাড়ির নীচের দোকানগুলির কর্মীরা জানান, বাড়িটির গায়ে ‘বিপজ্জনক’ লেখা বোর্ড ঝুলছে বহু দিন ধরেই। বছরখানেক আগে পুরসভা বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করে। কিন্তু বাড়ির সামনের দু’টি বারান্দায় হাত পড়েনি। এই ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে বাসিন্দা ও পুরসভার চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা আগেও বিপজ্জনক অংশ ভেঙেছিল। এ বার গাড়ি-বারান্দাও ভাঙতে বলেছি।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মাস খানেক আগে ওই বারান্দার ঠিক পাশেই আর একটি বারান্দার একাংশ ভেঙে পড়ে। তার পর থেকে পুরসভাকে বারান্দা দু’টি ভাঙার ব্যাপারে বারবার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। ওই বাড়িরই এক বাসিন্দা শ্যামচাঁদ দে বলেন, “আচমকা বারান্দাটা ভেঙে পড়ল। কপাল ভাল, বেঁচে গেলাম। বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত।”
|
‘বিপজ্জনক’ ঘোষিত বাড়ির বারান্দা ভেঙে পড়ে জখম পথচারী। |
যদিও পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “মাস দুয়েক আগেই ওই বাড়ির কিছু বিপজ্জনক অংশ ভাঙা হয়। বাড়িটি নিয়ে ভাড়াটে ও মালিক পক্ষের মধ্যে মামলা চলায় পুরসভার আর কিছু করণীয় ছিল না।” তিনি জানান, বাড়ির ভগ্নদশার কথা জেনেই সেটিকে বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পুর আইনে এর বেশি কিছু করার নেই। তবে গাড়ি-বারান্দা ভেঙে পড়ায় এ বার পুরসভা ওই অংশ ভেঙে দেবে। তিনি জানান, বুধবার রাতের মধ্যেই ওই অংশ ভাঙার কাজ শেষ করবেন পুরকর্মীরা।
স্থানীয় কাউন্সিলর কংগ্রেসের সন্তোষ পাঠক বলেন, “চার বছর আগে ওই বাড়ি-সহ এলাকার ১০-১২টি বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা পুরসভায় জমা দিয়ে সেগুলি ভাঙতে বলেছিলাম। মেয়রকেও চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু পুর-প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এ দিনের ঘটনার পরে ওদের নিশ্চয় শিক্ষা হবে।”
পাল্টা জবাব দেন ৫ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন তৃণমূল কাউন্সিলর অপরাজিতা দাশগুপ্ত। তাঁর দাবি, “রাজনৈতিক বাধায় বাড়ি ভাঙা বন্ধ ছিল।” কোন দলের বাধা? তিনি বলেন, “স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করুন।”
ওই বাড়ির নীচে ১০-১২টি দোকান রয়েছে। অশোক সাউ নামে এক দোকানদার বলেন, “এক বছর আগে বাড়ি ভাঙতে শুরু করেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে এই বারান্দা দু’টো বাদ রাখা হয়েছিল।” কী সেই কারণ, তা অবশ্য বলতে চাননি দোকানের কর্মীরা। |