অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • রামপুরহাট |
কোনও পড়ুয়ার বাবার নাম ভুল বা একজন পড়ুয়ার নামে দু’টি চেক এসেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পড়ুয়াদের বৃত্তি দেওয়ার জন্য পাঠানো চেকে নানা ভুল-ত্রুটি থাকার জন্য সমস্যায় পড়েছেন বীরভূম জেলার বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। হয়রান হচ্ছেন অভিভাবকেরাও। এই সমস্যা শুধু বীরভূম জেলার নয়। একই সমস্যা দেখা গিয়েছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলাতেও। ভুল-ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের তিন জেলার রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর আল হিলাল রসিদি। তিনি বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ চেক ইসু হয়েছে।” এর জন্য তিনি অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। তবে তাঁর আশ্বাস, “যে সব চেকে ত্রুটি বা অসঙ্গতি ধরা পড়ছে, ওই সব চেক দফতরে পাঠিয়ে দিলে সংশোধিত করে নতুন চেক পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পড়ুয়ারা ওই চেক পায় তারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।” রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের চেয়ারম্যান আবু আয়েষ মণ্ডল বলেন, “এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ রিপোর্ট করেননি।”
সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে মাস তিনেক আগে বীরভূমের ২২ হাজার পড়ুয়ার জন্য মাথা পিছু এক হাজার টাকার চেক বিভিন্ন স্কুলে দেওয়া হয়। কিন্তু চেকগুলি বিলি করার পরে দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের বাবার নাম উল্লেখ নেই। ফলে একই নামে একাধিক পড়ুয়া থাকায় ওই চেক বিলি করতে সমস্যা হচ্ছে। আবার দেখা যাচ্ছে, দিন পনেরো আগে বীরভূম জেলায় ১০ হাজার পড়ুয়ার জন্য চেক এসে পৌঁছয় বিভিন্ন স্কুলে। অনেক ক্ষেত্রে চেকে বাবার নাম ঠিক থাকলেও পড়ুয়ার নামের সঙ্গে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। ময়ূরেশ্বর থানার কৃষ্ণনগর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ পাল বলেন, “পড়ুয়াদের নামের ভুলের জন্য হোক বা অন্য কোনও কারণে, কয়েকটি চেক ত্রুটিপূর্ণ থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” নলহাটি থানার শ্রীপুর গ্রামের আমগাছি ভেলিয়ান প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “কিছু চেক একই পড়ুয়ার নামে দু’বার রয়েছে। ফলে সমস্যা হচ্ছে।” জেলার বিভিন্ন স্কুলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকরাও বলেন, “চেকে ত্রুটির জন্য স্কুলের তরফে কখনও মৌখিক অভিযোগ আসছে। তাঁদের বিষয়টি সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক বা কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি।”
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সব ত্রুটিপূর্ণ চেক বিলি না করে সংশ্লিষ্ট দফতরে যাতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের ফিল্ড অফিসের কর্মীরা সেই চেক সংশোধন করে পুনরায় স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন। |