ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংস্থা খুলে টাকা তোলার অভিযোগ
দেবদেবীদের নামে ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংস্থা খুলে বাজার থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায়। এলাকার অন্তত ৩০ জন ওই কারবারে যুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর, রিকশাচালকদের অনেকেই। ওই সংস্থাগুলি দৈনিক টাকা জমা নিয়ে বছরের শেষে চড়া হারে সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কেউ আবার ‘ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম’ চালু করেছে বলে অভিযোগ। পোড়াঝাড়, কাওয়াখালি এলাকায় গেলেই ওই অভিযোগ শোনা যায়। এমনকী, মাটিগাড়া থানায় ওই ব্যবসার বিষয়ে জানালেও পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি কেন তা নিয়েও বাসিন্দাদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “পুলিশের কাছে স্পষ্ট করে অভিযোগ হয়নি। স্পষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।”
অথচ এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা অন্যরকম। বাজারে শাক-সব্জি বিক্রি করেন এমন অনেকেই জানান, তাঁরা প্রায় ৫ বছর ধরে ওই ধরনের সংস্থায় টাকা রাখছেন। বছর ঘুরলে ফের বেশি সুদের আশায় সংস্থাগুলি আমানত জমা করিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ। ব্যাঙ্কের ধাঁচে পাস বই তৈরি করে টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি সংস্থা জয়গুরু ব্যাবসায়ী ব্যাক্তিগত সঞ্চয়ের কর্ণধার শিপেন বর্মন জানান, কেউ তাঁদের সদস্য হলে তবেই তাঁরা লেনদেন করেন। ওই এলাকার একাধিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এজেন্টরা জানান, তাঁদের সংস্থার কোনও ট্রেড লাইসেন্স পর্যন্ত নেই।
এইরকমই একটি সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন মেডিকেল কলেজ এলাকার বাসিন্দা স্বপন সাহা। তিনি ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে টাকা রেখেছিলেন ৫০ হাজার টাকা। তিনি তার টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন। একই রকমভাবে কাওয়াখালির বাসিন্দা বুদ্ধেশ্বর বাড়ই জানান, তিনি মাসিক হিসেবে টাকা রাখতেন। সারদা কাণ্ডের পর টাকা জমা রাখা বন্ধ রয়েছে। তিনি তার এজেন্টের কাছে জানতে চাইলে তাকে জানানো হয়েছে আপাতত নতুন টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে না। পরে ফের জমা শুরু হলে টাকা দেওয়া হবে। হিমাংশু তালুকদার নামে এক আমানতকারী লক্ষ্মী নারায়ণ দৈনিক সঞ্চয় নামে একটি তহবিলে দৈনিক ২০০ টাকা করে রাখেন। তিনি অবশ্য টাকা জমা রাখার কথা স্বীকার করলেও টাকা পাচ্ছেন কি না তা নিয়ে কিছু জানাতে চাননি। বিজু ভাদুড়ি নামে অপর এক আমানতকারীও জানান, তিনি নিয়মিত টাকা পাচ্ছেন না। কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অভিযোগ থাকলেও অর্থ পাওয়ার শেষ আশায় কেউই সেভাবে সরব হন না। এদিকে সমস্যার খবর পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট আকারে না পৌঁছানোয় এই বেআইনি সংস্থাগুলো এখনও প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে ব্যবসা করে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
মাটিগাড়া (১) গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান অধীর বর্মন ওই অভিযোগ শুনেছেন। তিনি বলেন, “এমন ব্যবসা এলাকায় বেশ কিছু লোক করছে বলে শুনেছি। কোনও লাইসেন্স দেওয়ার প্রশ্নই নেই।” মাটিগাড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বজিত্‌ ঘোষ জানান, তাঁরা ওই ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এলাকায় লোক ঠকানোর কোনও কারবার বরদাস্ত করা হবে না বলে তৃণমূলের ওই নেতা জানান। মাটিগাড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি পার্থ সেনগুপ্ত অবশ্য বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাহায্য চাইব। তাতে কাজ না হলে বৃহত্তর অন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, দিনের পর দিন ধরে ওই ধরনের ব্যবসার প্রবণতা বাড়ছে। নানা সময়ে বাসিন্দাদের তরফে রাজনৈতিক নেতাদের কাছে অভিযোগ জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তাঁরা। কিন্তু, কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এখনও সক্রিয় পদক্ষেপ করা হয়নি কেন তা নিয়েই এলাকার ভুক্তভোগীরা উদ্বিগ্ন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.