|
|
|
|
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর |
চোর অপবাদে বরখাস্ত দুই কর্মী জেলাশাসকের দ্বারস্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত করে তাঁদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা আদৌ এ সবে জড়িত নয়। এই দাবি করেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দুই কর্মী। দফতরের জেলা আধিকারিক শম্পা হাজরার অবশ্য বক্তব্য, “চুরির কোনও ঘটনাই ঘটেনি।” তাহলে ওই দুই কর্মীকে সরানো হল কেন? জবাব এড়িয়ে শম্পাদেবী বলেন, “ওঁরা দু’জন অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। কাজ করতেন ঠিকাদারের অধীনে।” জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ওই দু’জনের আবেদনপত্র পেয়েছি। বিষয়টি দেখছি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপ পাত্র ও আশিস দে নামে ওই দুই কর্মী মেদিনীপুরে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে কাজ করতেন। সন্দীপবাবু বলেন, “২০০৭ সাল থেকে আমি ওই অফিসে কাজ করছি। গত ৬ মে হঠাত্ আমাকে বসিয়ে দেওয়া হয়। কোনও প্রমাণ ছাড়াই চোর অপবাদ দেওয়া হয়।” জেলাশাসককে দেওয়া আবেদনপত্রে সন্দীপবাবু লিখেছেন, ‘আমি বিবাহিত। একটি সন্তান রয়েছে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। আচমকা কোনও কারণ ছাড়াই আমাকে বসিয়ে দেওয়ায় খুব আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়েছি।”
সন্দীপবাবুর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের কুইকোটা এলাকায়। আর আশিসবাবু থাকেন শহরের বিদ্যাসাগরপল্লিতে। আশিসবাবুর বক্তব্য, “আমি দীর্ঘ ১২ বছর এখানে কাজ করছি। দুর্ভাগ্য এই যে, অফিসের কিছু টাকা চুরি যাওয়ায় আমাকে চোর অপবাদ দিয়ে কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” আশিসবাবুরও কাজ গিয়েছে গত ৬ মে। জেলাশাসককে দেওয়া চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই। ভবিষ্যতেও সততার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাকে বরখাস্ত করলে আমার পরিবার না খেতে পেয়ে বিপদে পড়বে।’
হঠাত্ দুই কর্মীকে বরখাস্ত করায় কর্মী মহলেও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সরব হয়েছে বিভিন্ন কর্মী সংগঠন। তাদের বক্তব্য, হতে পারে এই দু’জন অস্থায়ী কর্মী। কিন্তু একজন ৬ বছর, অন্যজন ১২ বছর ধরে কাজ করছেন। তাহলে তাদের কারণ না দেখিয়ে বরখাস্ত করা হল কেন? একটি কর্মী সংগঠনের মতে, চুরি যদি হয়েই থাকে, তাহলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হবে। নিয়মমাফিক তদন্ত হবে। এ ক্ষেত্রে এমন কিছু হয়েছে বলে জানা নেই।
সম্প্রতি চুরির কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে মানছে না জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরও। তা হলে কেন ওই দুই কর্মীকে সরানো হল? এই প্রশ্নের কোনও জবাব অবশ্য মেলেনি। বরখাস্ত দুই কর্মী এখন জেলাশাসকের দিকে তাকিয়ে। তাঁদের আশা, সুবিচার মিলবে। |
|
|
|
|
|