|
|
|
|
|
মনোজ, আগ্রাসনটা
ব্যাটে দেখালে পারতে
অশোক মলহোত্র |
|
বাংলার ক্রিকেটারদের আইপিএল পারফরম্যান্স নিয়ে লিখতে বসে একটা অদ্ভুত তুলনা মাথায় এল। আইপিএল ফাইভে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমরা সবাই আশা করেছিলাম, কেকেআর এ বারও দুর্ধর্ষ কিছু একটা করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চরম হতাশ হতে হল। আর কলকাতার টিমের যা দশা, বাংলার ক্রিকেটারদেরও তাই। প্রত্যাশা প্রচুর ছিল, সামি আহমেদদের মতো দু’এক জনকে বাদ দিলে সুযোগও প্রত্যেকে যথেষ্ট পেয়েছে, কিন্তু তবু কেউ এমন কিছু করতে পারেনি যে কারণে কাউকে মনে রাখার যেতে পারে। যাক গে, ছ’জন প্লেয়ারের একে একে করছি।
মনোজ তিওয়ারি: ক্রিকেট-টিকেট নয়, মনোজের এখন সবার আগে দরকার মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য মাথায় আইসপ্যাক নিয়ে ঘোরা! ইদানীং বাংলার কোনও ক্রিকেটারকে আমি এত মাথা গরম করতে দেখিনি। টিমের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুমদাম টুইট করে দিচ্ছে। আবার মোক্ষম সময়ে ওর মতো বারবার চোট পেতেও কাউকে দেখিনি। মনোজের সঙ্গে আমার বেশ কিছু দিন দেখা হয়নি। দেখা হলে বলব যে, আগ্রাসন দেখানো মাঝেমধ্যে ভাল। কিন্তু শুধুই আগ্রাসন দেখালে কোনও কাজ হয় না। ব্যাটটাও করতে হয়। বিরাট কোহলিদের দেখে শেখো, দায়িত্ব সামলানো কাকে বলে।
কেকেআর ম্যানেজমেন্ট মনোজের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ঠিক কাজ করেনি, কথাটা ঠিক। আমি মনে করি, তিন বা চার নম্বরে নামালে মনোজ ভাল খেলত। কিন্তু এটাও ঠিক যে, ব্যাটিং অর্ডারে কোনও জায়গা নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে ফেলতে গেলে, নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। মনোজ সেটা করল কোথায়? কেন মোহালিতে কিংস ইলেভেন ম্যাচ আর রাঁচিতে পুণে ম্যাচটা শেষ করে আসবে না ও? |
আইপিএল সিক্সে বঙ্গ ব্রিগেড |
|
মনোজ তিওয়ারি:
১০ ম্যাচে ১৪৬ রান,
সর্বোচ্চ ৩৩, গড় ১৮.২৫,
স্ট্রাইক রেট ১০৪.২৮ |
লক্ষ্মীরতন শুক্ল:
৪ ম্যাচে ৩ রান,
১ উইকেট, সর্বোচ্চ ৩,
গড় ১.৫০ |
ঋদ্ধিমান সাহা: ৩ ম্যাচে ৭০ রান, সর্বোচ্চ ৩৯, গড় ২৩.৩৩, স্ট্রাইক রেট ১২৫ |
সামি আহমেদ:
৩ ম্যাচে ১ উইকেট,
ইকনমি রেট ৮.৮৪ |
অশোক দিন্দা:
১৩ ম্যাচে ১৬ উইকেট,
ইকনমি রেট ৯.৪৮,
সেরা ৩-৩১ |
|
লক্ষ্মীরতন শুক্ল: বাংলার জার্সিতে যে ছেলে দুর্ধর্ষ খেলে, জানি না সে কেন কেকেআরের হয়ে এ রকম খেলল? মনে হয়, ওর প্ল্যানিংটা এ বার ঠিকঠাক হয়নি। ওর হাতে বড় শট আছে। কিন্তু এ বার নেমেই দেখছিলাম, চালাতে যাচ্ছে। তবে ওর বোলিং দক্ষতার কোনও ব্যবহারই করেনি কেকেআর ম্যানেজমেন্ট। কেন, জানি না। চোটটাও ফ্যাক্টর হয়ে গেল। মনোজ তো তবু শেষ দিকে ফিরল। লক্ষ্মী কয়েকটা ম্যাচ খেলে গোটা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গেল।
ঋদ্ধিমান সাহা: দেখতে গেলে, বাংলার ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল ব্যাটিং ও-ই করেছে। খুব বেশি সুযোগ পায়নি। দু’টো কি তিনটে ম্যাচ খেলেছে। তবে ঋদ্ধিমানকে দু’টো জিনিস বুঝতে হবে। এক, চেন্নাই সুপার কিংসে থেকে ওর কোনও লাভ হবে না। যত দিন ধোনি থাকবে, ও উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের স্লটে কখনওই আসবে না। আর দুই, ঋদ্ধিকে এ বার বাংলার হয়ে ওপেন করা শুরু করতে হবে। নইলে জাতীয় সার্কিটে কোনও পাত্তা পাবে না। দীনেশ কার্তিক, পার্থিব পটেল, সবাই নিজের রাজ্যের হয়ে ওপেন করে। ঋদ্ধিকেও করতে হবে। বুঝতে হবে, জাতীয় দলে কোন স্লটে আমি ঢুকতে পারি। ওপেনিং ছাড়া সেখানে কোনও জায়গা আছে?
সামি আহমেদ: কেকেআর ম্যানেজমেন্টের কী অবস্থা, সেটা সামিকে লাগাতার বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত থেকেই বোঝা যায়। ছেলেটা কী পারে না? ন্যাচারাল আউটসুইং আছে, রিভার্স করাতে পারে, ইয়র্কার দিতে পারে। রবিবারের সানরাইজার্স ম্যাচটাই ভাবুন না। তবু ওর জায়গায় কী ভাবে বালাজি হয়?
অশোক দিন্দা: স্লগে খুবই সাধারণ লাগল। স্লগ বোলিং শিখতে হবে। বৈচিত্র বাড়ানো দরকার। স্লোয়ার বাউন্সার, ইয়র্কার শিখতে হবে।
দেবব্রত দাস: ওকে তেমন উঁচু দরের প্লেয়ার বলে মনে করি না। টেম্পারামেন্ট ভাল নয় একেবারে। মাঝেমধ্যে দু’একটা বড় শট মারে। ব্যস। অত ভাল প্লেয়ার হলে তো রঞ্জি ট্রফিতে রেগুলার খেলত। খেলছে কি? |
|
|
|
|
|