এ বারের আইপিএল সেই পর্বে চলে এসেছে, যে কোনও টুর্নামেন্টেই যেটার পরিচিত নাম ‘বিজনেস এন্ড’। যেখানে আসল কাজের শুরু। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। যেখান থেকে খেতাবটা দেখা যায় আর সেই লড়াই কোন চারটে টিম করছে সেটা অবশেষে স্পষ্ট হয়। প্লে-অফে যে চার ফ্র্যাঞ্চাইজি উঠেছে সেই সিএসকে, রাজস্থান রয়্যালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ আর আমাদের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই পর্বে পৌঁছনোর যাত্রাপথটা এক বার স্মরণ করাটা মনে হয় ন্যায্য।
চার দলের কাছেই এটা আবেগময় উত্থান-পতনের পথ। গায়ে-গায়ে ম্যাচ খেলতে হয়েছে। প্রায় কোনও বিশ্রাম ছাড়াই। তা-ও হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে। বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে, বিভিন্ন শহরে, বিভিন্ন পরিবেশে, বিভিন্ন সময়ে। কখনও বিকেল চারটে, কখনও রাত আটটায়। স্বভাবতই প্রচুর ট্র্যাভেল করতে হয়েছে টিমকে। যে কারণে এত দীর্ঘমেয়াদি টুর্নামেন্টে যেটা প্রায় অসম্ভব, সেই সর্বদা সেরা ফর্মে কোনও দলই থাকেনি। কিন্তু তার মধ্যেই ষোলো ম্যাচের লিগ থেকে যে চারটে দল প্লে অফে উঠেছে তারা সবচেয়ে ধারাবাহিকই শুধু ছিল, তাই নয়। লিগ পর্যায়ে আসল সময় বেশি ভাল খেলেছে। চাপের মুহূর্তগুলো বেশি ভাল সামলেছে।
আইপিএলে প্লে অফ চালু হওয়ার পর এই প্রথম মুম্বই নিরপেক্ষ ভেনুতে খেলছে। মঙ্গলবার আমরা যখন দিল্লিতে সুপার কিংসের মুখোমুখি হব, কোটলায় ব্যক্তিগত সুখস্মৃতি আমাকে তাড়া করবে। তেমনই এ মরসুমে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের মুম্বইয়ের দু’টো ক্লাসিক জয়ের কথাও মনে পড়বে। কোটলায় টেস্টে আমার এক ইনিংসে দশটা উইকেটই নেওয়ার কথা কি কখনও ভোলা সম্ভব? তেমনই এ বার আইপিএলে চেন্নাইকে আমরা ওয়াংখেড়ে আর চিপক দু’জায়গাতেই হারিয়েছি। কিন্তু এগুলো শুধু সুখস্মৃতি। আজ, মঙ্গলবারের মহালড়াইয়ের ক্ষেত্রে প্রায় মূল্যহীন। কোটলায় আজ টসের সময় দু’দলের কাছেই স্লেটটা পরিষ্কার। আজ যারা নিজেদের গেমপ্ল্যানকে মাঠে বেশি সফল ভাবে প্রয়োগ করতে পারবে তারাই জয়ী হিসেবে গভীর রাতে মাঠ ছাড়বে। হ্যাঁ, আমরা খানিকটা আত্মবিশ্বাস সঙ্গে করে নামব। চেন্নাইয়ের মতো দলকে, যাদের টিমে একঝাঁক ম্যাচ জেতানোর ক্রিকেটার আছে, তাদের কী ভাবে হারিয়েছিলাম সেই জ্ঞানটুকু থাকার আত্মবিশ্বাস। কিন্তু তার বেশি কিছু দূরে আর আমাদের তাকানোর উপায় নেই। লিগে প্রথম দু’দলের মধ্যে থাকার একটা সুবিধে হল, ফাইনালে ওঠার জন্য দু’টো সুযোগ পাওয়া যায়। মঙ্গলবারের চেন্নাই ম্যাচটা আমরা সেমিফাইনাল ভেবে খেলব। কোটলায় একটা দুর্ধর্ষ ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। |