নিজস্ব সংবাদদাতা • আমোদপুর |
দুর্গাপুজোর সঙ্গে এই পুজোর আচারে বিশেষ কোনও ফারাক নেই। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ কিংবা জ্যৈষ্ঠের শুরুতে জাহ্নবী তিথিতে হওয়া জয়দুর্গা পুজোর বিশেষত্ব রয়েছে প্রতিমাতে। সিংহবাহিনী মেঘবরণ চতুর্ভুজা দেবীর ডান পাশে রয়েছে লক্ষ্মী, বামে সরস্বতী। কার্তিক ও গণেশের পরিবর্তে লক্ষ্মীর পাশে জয়া, সরস্বতীর পাশে বিজয়া রয়েছে। নীচে মহেশ্বর, বিষ্ণু, ব্রহ্মা, ইন্দ্র। সবার উপরে শ্রীকৃষ্ণ। এ ছাড়াও রয়েছে নিতাই, গৌর, জগাই, মাধাই, প্রহ্লাদ ও হনুমানের মূর্তি। এই পুজোর জন্য মুখিয়ে থাকেড় গৃহবধূ থেকে কচিকাঁচারা। গৃহবধূ রীতা সেন, বাসন্তি সাহারা বলেন, “আমাদের সারা বছর ঘরেই কাটাতে হয়। বাজার ঘোরার অবকাশ থাকে না। তবে জয়দুর্গা ও শরৎকালীন দুর্গা পুজোর জন্য দু’বার নতুন জামাকাপড় কিনতে বাজার ঘোরার সুযোগ পাই।” |
জয়দুর্গা পুজো। — নিজস্ব চিত্র |
প্রথম শ্রেণির রূপম গড়াই, তৃতীয় শ্রেণির রিয়া চট্টোপাধ্যায়, সপ্তম শ্রেণির সুমন সাহাদের কথায়, “বছরে দু’বার পুজোর ছুটি পাই।” প্রচলিত আছে ১৭৯ বছর আগে ওই পুজোর প্রচলন করেন স্থানীয় জমিদার আমেদ সাহ ওরফে আহমেদ সাহ। যাঁর নামে আহমদপুর বা আমোদপুর হয়েছে বলে মনে করা হয়ে থাকে। জমিদারি গিয়েছে। জমিদারের অস্তিত্বও নেই। কিন্তু জয়দুর্গা রয়ে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই দেবীর নাম অনুসারে এলাকায় গড়ে উঠেছে জয়দুর্গা হাইস্কুল, জয়দুর্গা গার্লস হাইস্কুল, জয়দুর্গা গ্রন্থাগার, জয়দুর্গা টাউন ক্লাব-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ৭৯ বছরের নরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, ৬০ বছরের নকুল গড়াইয়া বলেন, “এলাকার বাসিন্দারা পুজোর দায়িত্ব তুলে নেওয়ার পরে ব্যবসায়ীরা প্রতিটি জিনিস বিক্রির সময় লাভের একটা অংশ তুলে রাখতেন। তা দিয়েই পুজোর ব্যবস্থা করা হত। বর্তমানে চাঁদা তুলে পুজো হয়।” পুজো কমিটির সভাপতি অসিতবরণ দে, সম্পাদক নির্মল চন্দ্র জানান, জয়দুর্গা পুজো দেখতে মণ্ডপে ভিড় জমান দূর-দূরান্তের মানুষজনও। নবমীতে নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি হয়েছে পঙ্ক্তিভোজ। আজ মঙ্গলবার দশমী। |