আদালতে যাচ্ছেন আর ফিরে আসছেন। কিন্তু বিচার মিলছে না। এই অভিযোগ তুলে সোমবার কাটোয়া সংশোধনাগারে বিক্ষোভ দেখালেন বিচারাধীন বন্দিরা।
ওই বন্দিদের দাবি, দায়রা বিচারক দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ, তাই আদালতে আসছেন না। এর সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। সোমবার ওই বিচারপ্রার্থীরা আদালতে যেতে অস্বীকার করলে, সংশোধনাগারে যান জেল সুপার তথা কাটোয়ার মহকুমাশাসক আর অর্জুন। বিচারপ্রার্থীরা তাঁকে লিখিত ভাবে পুলিশের ভূমিকা-সহ নানা সমস্যার কথা জানান। মহকুমাশাসক তাঁদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে বিচারপ্রার্থীরা বিক্ষোভ থামিয়ে আদালতের পথে পা বাড়ান।
জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে হাজিরার কথা ছিল নানা অপরাধে অভিযুক্ত কাটোয়ার কেশিয়া এলাকার বাসিন্দা জঙ্গল শেখ ও কলিম শেখের। সকালে এসডিপিও (কাটোয়া) সংশোধনাগারের জেলারকে জানান, পুলিশ ওই অভিযুক্তদের কৃষ্ণনগর নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রহরী-সহ কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারবে না। এর পরেই ওই দুই বন্দি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খুনের অভিযোগে তাদের সঙ্গেই কাটোয়া সংশোধনাগারে রয়েছে জঙ্গল শেখের ছেলে সাদ্দাম শেখ। এই তিন জন অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের আইনজীবী ফরমান শেখ অভিযোগ করেন, পুলিশ ইচ্ছে করেই গাড়ির ব্যবস্থা করেনি। তাই ওদের বিচার পেতে দেরি হল। পুলিশের এক কর্তা জানান, কয়েক দিন আগে কালনা কলেজে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময়ে কাটোয়া কলেজের ছাত্রেরা প্রহৃত হন বলে অভিযোগ ওঠে। সে রকম কোনও ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছিল। তাই আসামী নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ ও গাড়ির ব্যবস্থা করা যায়নি। পরে ওই তিন জনের সঙ্গে দায়রা আদালতের বিচারপ্রার্থীরাও বিক্ষোভে যোগ দেয়। তারা জেলারকে জানিয়ে দেয়, আদালতে যেতে রাজি নয় তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বিচারপ্রার্থী জানান, চার মাসের উপরে দায়রা আদালতে কোনও বিচার হচ্ছে না। প্রতিদিন আদালতে শুধু যাওয়া-আসাই হচ্ছে। তাঁদের কথায়, “সে কারণে আমরা আদালতে যেতে চাইনি।” অসুস্থ থাকায় দায়রা বিচারক ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে কাজে যোগ দিতে পারেননি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই আদালতে প্রায় একশোটি মামলা ঝুলে রয়েছে। বিচারপ্রার্থীরা সমস্যায় পড়ছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দায়রা বিচারক আদালতে যোগ দেবেন। পরবর্তী সময়ে কোনও আদালতে যাওয়ার জন্য পুলিশি প্রহরার অসুবিধা হবে না, এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরেই বিচারপ্রার্থীরা বিক্ষোভ থামান। মহকুমাশাসক বলেন, আর কোনও সমস্যা নেই। এ বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছে। |