জ্যোৎস্নাময়ী গার্লসে জয়ী বাম মনোভাবাপন্নরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
গত নির্বাচনে বামেদের হাত থেকে শিলিগুড়ির জ্যোৎস্নাময়ী গার্লস হাই স্কুলের পরিচালন কমিটি নিজেদের দখলে নিয়েছিল জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চ। রবিবার ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ছ’টি আসনেই জিতে ফের তা দখলে নিল বাম মনোভাবাপন্ন প্রার্থীরা।
২০১০ সালের আগে দীর্ঘদিন ওই স্কুল পরিচালন সমিতি বাম মনোভাবাপন্নদের দখলে ছিল। রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ পরিস্থিতিতে ২০১০ সালে স্কুল পরিচালন কমিটির নির্বাচনে সব ক’টি আসনেই জিতে তা দখল করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের প্রার্থীরা। এ বার মঞ্চের দুই শরিক কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির নির্বাচন নিয়ে মতৈক্য হয়নি। উল্টে কংগ্রেসের তরফে নতুন সংগঠন জাতীয়াবাদী শিক্ষা ও সংস্কৃতি মঞ্চ গড়ে আলাদা প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল।
নির্বাচনে গণনার ফল দু’বার দু’রকম ঘোষণা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ করা হয়। তবে শহরের অন্যতম ওই স্কুলটির পরিচালন কমিটিতে হারে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নেতাদের ভূমিকা নিয়েও দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। গত কয়েক বছর ধরেই জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের অন্যতম নেতা ছিলেন জয়ন্ত কর। তিনি কংগ্রেসে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি তৃণমূলে যোগ দেন এবং শিক্ষা সেলের দায়িত্ব পান। এ দিন নির্বাচনেJ মূল দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। স্কুল পরিচালন সমিতির হার নিয়ে তাই তাঁকে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। জয়ন্তবাবু ছাড়াও সমীরণ সূত্রধর, জয়দীপ নন্দী, প্রশান্ত চক্রবর্তীর মতো দলের অনেক কাউন্সিলর, মহিলা নেত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জয়ন্তবাবু বলেন, “সকলে চেষ্টা করেছি। কী কারণে হার হল তা আমরা খতিয়ে দেখব। আমরা জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের তরফে প্রার্থী দিয়েছিলাম। কংগ্রেস নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করেছে এবং সিপিএমকে সুবিধা পাইয়েছে।” তাই ভোট কাটাকাটিতে বাম মনোভাবাপন্নরা জিতেছেন বলে তৃণমূলেরই একাংশ স্বীকার করেছেন। ৪ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান সমীরণবাবু বলেন, “আমরা অভিভাবকদের হয়ত বোঝাতে পারিনি। এর আগে সব আসনে জেতার পর কী কারণে এ বার হারতে হল তা দেখতে হবে।” স্কুলটি যে ওয়ার্ডে সেখানকার কাউন্সিলর প্রশান্তবাবু। তিনিও হারের পিছনে কংগ্রেস মনোভাবাপন্নদের আলাদা প্রার্থী দেওয়াকে কারণ বলে মানছেন।
শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার এবিটিএ সম্পাদক তথা বামমনোভাবাপন্নদের শিক্ষা গণতন্ত্রীকরণ সংস্থার জেলা আহ্বায়ক তমাল চন্দ বলেন, “মানুষ বুঝতে পারছেন। তাই পরিবর্তনের ফানুস ফেটে গিয়েছে। অভিভাবকরা যে আমাদের পক্ষেই আছেন তা প্রমাণ হল।” তাঁদের দাবি, সম্প্রতি সারদামণি বিদ্যাপীঠের পরিচালন কমিটির ভোটে বাম মনোভাবাপন্নরা জিতেছেন।
কংগ্রেস মনোভাবাপন্নদের জাতীয়বাদী শিক্ষা এবং সংস্কৃতি মঞ্চের দায়িত্বে ছিলেন বিকাশ সরকার। তিনি বলেন, “তৃণমূল বলছে জোট হয়নি বলে হারতে হয়। আমরা জাতীয়তাবাদী শিক্ষা মঞ্চের হয়ে একজোট হয়ে নির্বাচন করতে বলেছিলাম। তৃণমূল রাজি হয়নি।” কংগ্রেস জানায় হয় ১৪ মে পর্যন্ত তারা জোটের জন্য অপেক্ষা করেছেন। এর পর তৃণমূল জোট না চাওয়াতে তারা আলাদা মঞ্চ গড়ে প্রার্থী দেন। তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘মঞ্চের তরফে বৈঠক ডাকা হয়। কংগ্রেস তাতে আসেনি।” |