আইএসআই চর সন্দেহে গ্রেফতার মোর্চা নেতা-সহ ৪ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এক নেতা সহ ৪ জনকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে সন্দেহে কার্শিয়াং থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর এক বহিষ্কৃত কর্মীও। তিনি এবং অন্য দু’জনও মোর্চা সমর্থক বলে পরিচিত।
শনিবার কার্শিয়াং পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে গাড়িধুরা সংলগ্ন আদলপুর, পানিঘাটা ও নকশালবাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম মেসা সাউরি, মগন বাহাদুর সিংহ, ধনবাহাদুর প্রধান ও গোপাল খাতি। মগনবাহাদুর ও মেসা আইএসআইয়ের ‘সক্রিয় এজেন্ট’ বলে পুলিশের দাবি। বাকি দু’জন লিঙ্কম্যান। মগনের বাড়ি আদলপুরে। মেসা ও ধনবাহাদুরের বাড়ি পানিঘাটায়। মেসা মোর্চার কার্শিয়াং জোনাল কমিটির সদস্য। গোপালের বাড়ি নকশালবাড়িতে। আরও দু’জনকে খুঁজছে পুলিশ।
ধৃতদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর সুকনা ও সংলগ্ন এলাকার ম্যাপ-সহ বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে। ৬টি মোবাইল ফোন একাধিক সিম কার্ড, ল্যাপটপও উদ্ধার হয়েছে। দার্জিলিংয়ের এসপি কুণাল অগ্রবাল বলেন, “ওই পাঁচ জনের সঙ্গে আইএসআইয়ের যোগ স্পষ্ট হয়েছে। আরও কয়েক জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “মেসা যে এই রকম কাজে জড়িত ছিলেন, তা জানতাম না। মেসাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। দেশ বিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই সাজা হওয়া দরকার।” |
কার্শিয়াং থানায় আইএসআই চর সন্দেহে ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র। |
সম্প্রতি রাজস্থানে আইএসআইয়ের চর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, তাকে জেরা করেই সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা এমন বেশ কয়েক জনের সন্ধান মিলেছে যারা আইএসআইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখত। উত্তরবঙ্গের আইজি অনুজ শর্মা বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’’
পুলিশ জানতে পেরেছে, মেসা প্রায় চার বছর ধরে আইএসআইয়ের চর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি নেপালে পাক হাই-কমিশনে গিয়ে আইএসআই কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করতেন। সেখান থেকেই তাঁকে টাকা দেওয়া হত। পুলিশের ধারণা, বাকিদের এই কাজে জড়িয়ে নেন মেসাই। মগনবাহাদুর সেনাবাহিনীর গাড়ি চালক ছিলেন। একাধিক অভিযোগ ওঠায় তাঁকে ২০০৭ সালে বহিষ্কার করা হয়। ধনবাহাদুরও সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী ভাবে কাজ করতেন। জমির কারবারি গোপালের সঙ্গে এক সেনা অফিসারের পরিচয় ছিল।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সেনা শিবিরে কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, কত সেনা রয়েছেন, সব তথ্যই তাঁরা আইএসআইকে সরবরাহ করতেন। ধনবাহাদুর মাস তিনেক আগে আফগানিস্তানও গিয়েছিলেন। মেসাও কয়েক মাস আগে দুবাই গিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এ ছাড়া ওই চার জন উত্তরপূর্বের বিভিন্ন সীমান্ত রাজ্যতেও ঘন ঘন যাতায়াত করতেন। |