অফিসে কুপিয়ে খুন ৩ সংবাদকর্মীকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ভরদুপুরে শহরের ব্যস্ত এলাকার একটি সংবাদপত্র অফিসে ঢুকে তিনজনকে কুপিয়ে খুন করল অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা। আগরতলার শকুন্তলা রোডের ‘দৈনিক গণদূত’ অফিসে আজ দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। ওই অফিসের পাশেই ত্রিপুরার রাজপ্রাসাদ। রাজ্য পুলিশের ডিএসপি (সদর) রাজেন্দ্র দত্ত জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় পেশাদার খুনিরা জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। তবে কী কারণে তিনজনকে খুন করা হল তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। |
দৈনিক গণদূত পত্রিকার অফিসে রক্তমাখা জুতোর ছাপ।
এখানেই খুন করা হয় তিন জনকে। |
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার আগরতলা পুর-এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন দুপুর পৌনে ৩টে নাগাদ দু’জন দুষ্কৃতী ওই অফিসে ঢোকে। রাস্তায় তাদের শাগরেদরা মোটরসাইকেলে অপেক্ষা করছিল। তিনতলা বাড়ির দো’তলায় সংবাদপত্রটির ম্যানেজার রঞ্জিৎ চৌধুরীর (৬০) ঘরে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্রে তাঁর গলা কেটে দেয় তারা। ওই সময় দো’তলার একটি ঘরে ছিলেন সাংবাদিক সুজিত ভট্টাচার্য (৩২)। রঞ্জিৎবাবুর আর্ত চিৎকার শুনে তিনি ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছে, সুজিতবাবুর গলায় সরু তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে আততায়ীরা। একইসঙ্গে তাঁর পেটে ধারালো অস্ত্রও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তদন্তকারীরা জানান, ‘কাজ হাসিল’ করে পালানোর সময় দুষ্কৃতীদের মুখোমুখি পড়ে যান ওই অফিসের গাড়ির চালক বলরাম ঘোষ (৪০)। খুন করা হয় তাঁকেও। |
নিহত গাড়ির চালকের স্ত্রী নিয়তি দেবী। |
পুলিশ সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীরা তার বাবাকে মারধর করছে দেখে এগিয়ে গিয়েছিল বলরামবাবুর বছর এগারোর মেয়ে পাপিয়া। একজনের জামাও টেনে ধরে সে। মেয়েটিক দু’হাতে রক্ত লেগে যায়। পুলিশকে পাপিয়া জানিয়েছে, ছুরি উঁচিয়ে তার দিকে তেড়ে যায় ওই দুষ্কৃতী। হুমকি দিয়ে তাকে বলে, ‘এখান থেকে না-গেলে তোকেও মেরে ফেলব।’ ভয়ে চিৎকার করতে শুরু করে পাপিয়া।
দ্রুত সেখান থেকে পালায় আততায়ীরা। ভিড় জমে যায় ওই অফিসে। খবর যায় পুলিশের কাছে। পৌঁছয় ‘ডগ স্কোয়াড’। অফিস ঘুরে দেখার পর রাস্তায় বের হয়ে ছুটতে থাকে ‘স্নিফার-ডগ’। সংবাদপত্র অফিসটি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি পেট্রোল-পাম্পে গিয়ে থেমে যায় সেটি।
|
ছবি: উমাশঙ্কর রায় চৌধুরী |
|