|
|
|
|
লাদাখে অনুপ্রবেশ নিয়ে চিনকে কড়া বার্তা নয়াদিল্লির |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
এক দিকে সাম্প্রতিক চিনা সেনা অনুপ্রবেশ নিয়ে জাতীয় উদ্বেগ প্রকাশ এবং তার সমাধান খোঁজা। অন্য দিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তিধর দেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিময় সুষম করা। চিনের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে নয়াদিল্লির তিন দিনের কূটনৈতিক দৌত্য আজ শুরু হল এই দ্বিমুখী কৌশলের মাধ্যমেই। আজ সন্ধ্যায় কূটনৈতিক নৈশভোজে চিনা প্রধানমন্ত্রী লে কেকিয়াংয়ের কাছে বিষয়গুলি নিয়ে ভারতীয় অবস্থান স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
তিন দিনের এই সফরে চিনা প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিশাল বাণিজ্য প্রতিনিধি দল নিয়ে যাবেন মুম্বইয়েও। সেখানে ভারতীয় বণিকসভাগুলির সঙ্গে পৃথক বৈঠকের মাধ্যমে রচিত হবে পারস্পরিক বিনিয়োগ বাড়ানোর নীল নকশা। আজ তাঁর বৈঠকে মনমোহন এক দিকে ভারত এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি সরব হয়েছেন লাদাখে সাম্প্রতিক অনুপ্রবেশ নিয়ে। ব্রহ্মপুত্র-সহ যে সব নদী দু’দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে কোনও ভাবেই সেগুলির গতিপথ পরিবর্তন করা যাবে না বলেও চিনা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন তিনি। আর চিনের কাছে সব চেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় তিব্বত নিয়ে জানিয়েছেন, দলাই লামা কেবলই এক জন ধর্মগুরু। |
|
নৈশভোজের আগে মনমোহন-কেকিয়াং। ছবি: এপি |
লাদাখ নিয়ে কড়া অবস্থান নিতে সরকারকে চাপ দিচ্ছিল বিরোধী দলগুলি। রাতের ভোজসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব, সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাটের মতো বিরোধী নেতারাও। ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীও।
লি কেকিয়াং অবশ্য ইতিবাচক বার্তা দিয়েই সফর শুরু করেছেন। একটি বিবৃতিতে তিনি এশিয়ার সার্বিক প্রেক্ষাপটে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের তারটি বেঁধেছেন। কেকিয়াং-এর কথায়, “ভারত এবং চিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, জাতীয় উত্থানের প্রশ্নে একসঙ্গে কাজ করা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়গুলি এশিয়া এবং বিশ্বের কাছে মঙ্গলজনক।”
চিনা শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তনের পরে প্রথম বিদেশ সফর হিসাবে নয়াদিল্লিকে বেছে নিয়েছেন কেকিয়াং। এই পদক্ষেপকে ইতিমধ্যেই স্বাগত জানিয়েছে ভারত। তবে ভারতের জাতীয় স্পর্শকাতরতার বিষয়টি নিয়ে যে কোনও সমঝোতা করা হবে না, তা আগেই একাধিক বার জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। পাশাপাশি চিনে ভারতের রফতানি এবং বিনিয়োগ বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর দিকেও এ বারের দৌত্যে সমান যত্নশীল থাকছেন সাউথ ব্লকের কর্তারা। চিনের সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য একটি পৃথক মডেলও তৈরি করছে বণিকসভাগুলি।
সোমবার থেকে শুরু হবে দু’দেশের প্রতিনিধি স্তরে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, যার শেষে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে। প্রাক্তন চিনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের ভারত সফরের সময়ে যৌথ বিবৃতিতে তিব্বত ও তাইওয়ানের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হয়েছিল। কূটনীতিকদের মতে, এ বার যৌথ বিবৃতিতে ওই বিষয়গুলির উল্লেখ থাকে কি না তা দেখার বিষয়। পাশাপাশি লাদাখের সাম্প্রতিক অনুপ্রবেশের বিষয়টিও রাখার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি।
|
পুরনো খবর: অনুপ্রবেশ হবে না, চিনের পাকা কথা চায় দিল্লি |
|
|
|
|
|