বন্দিরা দিলেন মাজন আর জেল কর্তারা গামছা
তাঁর কাছে না আছে গামছা, না টুথপেস্ট-ব্রাশ। সাতসকালে ঘুম থেকে তুলে আদালতে পাঠানোর জন্য তৈরি করতে গিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছিলেন জেলকর্তারা। শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এলেন জেলের অন্য বন্দিরা। তাঁরাই এনে দিলেন মাজন। জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মিলল গামছা ও টুথব্রাশ। দাড়ি কেটে দেওয়ার ব্যবস্থাও করল কর্তৃপক্ষই। এ ভাবেই চেয়েচিন্তে রবিবার সকালে দমদম জেলে পরিপাটি হলেন সুদীপ্ত সেন ও তার সঙ্গী অরবিন্দ চৌহান। এর পর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর আদালতে।
এমনিতে জেলের রাতটা খারাপ কাটেনি সুদীপ্তদের। দমদম জেলের সব সেলে পাখার ব্যবস্থা নেই। কিন্তু শনিবার সুদীপ্ত এবং অরবিন্দকে যে সেলে রাখা হয়েছিল, সেই দু’টিতেই পাখা রয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর। তবে বাকি কম্বল-চাদরের ব্যবস্থা ছিল আম-বন্দিদের মতোই। জেলের এক কর্মীর কথায়, “শনিবার রাতে কয়েক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় আবহাওয়া খানিকটা ঠান্ডা ছিল। তার উপরে পাখার হাওয়া থাকায় রাতে ভালই ঘুমিয়েছেন সুদীপ্তরা। অন্য বন্দিদের সঙ্গে কথাবার্তা তেমন বলেননি।”
জেল সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সুদীপ্ত ও অরবিন্দকে নিয়ে আসা হয় দমদম জেলে। সাধারণ ভাবে নতুন আসা বন্দিদের জেলের ‘আমদানি সেল’-এ রাখা হয়। দিন দুই সেখানে রাখার পরে তাঁদের জন্য সেল বা ওয়ার্ড নির্দিষ্ট করা হয়। সুদীপ্ত সেনদের কিন্তু জেলে আসার সঙ্গে সঙ্গেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৩ নম্বর সেলে। সেখানে আগে থাকতেই আছেন দুই মাওবাদী বন্দি সৌমেন আর ট্যারা মাস্টার। এ ছাড়া আছেন দু’জন পাকিস্তানি বন্দি-সহ বেশ কয়েক জন বিদেশি। যার মধ্যে এক জন নাইজেরীয় এবং এক জন চিনা।
পাকিস্তানের জেলে ভারতীয় বন্দি সর্বজিৎ এবং কাশ্মীরের জেলে পাকিস্তানি বন্দি সালাউদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনার পরে এখন রাজ্যের সব পাকিস্তানি বন্দিকে ঘিরে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে কারা দফতর। সেই কারণে, এমনিতেই দমদমের তিন নম্বর সেলে নিরাপত্তার কড়াকড়ি একটু বেশি। তা সত্ত্বেও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সুদীপ্ত এবং অরবিন্দের সঙ্গে সর্বক্ষণের জন্য এক জন রক্ষীর ব্যবস্থা করা হয়। জেল সূত্রের খবর, সুদীপ্তরা আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চা-বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়। এর পরে অন্য বন্দিদের মতোই সেলে বসে রাতের খাবার খান তাঁরা। মেনু? রুটি আর আলু-পটলের তরকারি। তার আগে জেলের ডাক্তার ওঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। জেল সূত্রের খবর, “দু’জনের শরীর এবং মানসিক অবস্থা মোটের উপরে ভালই রয়েছে। ব্লাডপ্রেশার থেকে শুরু করে সব কিছু মোটামুটি স্বাভাবিকই ছিল।”
গোল বাধে রবিবার সকালে। সুদীপ্তদের কাছে গামছা-টুথপেস্ট-মাজন কিছুই ছিল না। জেলের এক কর্মীর কথায়, “জেল কর্তৃপক্ষই তাঁদের কাছে থাকা গামছা, টুথব্রাশ ব্যবহার করতে দেন। অন্য বন্দিরা টুথপেস্ট দেন।” দাড়ি কেটে, ভাল করে স্নান করে নেন সুদীপ্তরা। তার পরে দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা দেন আদালতের উদ্দেশে। দুপুরের মেনু ছিল ভাত, ডাল, আলু চোখা, ঢ্যাঁড়শের তরকারি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.