এক হাট থেকে আরেক হাটে সব্জি বিক্রি করে সংসার চালান বাবা। মাঝপথে পড়া বন্ধ করে রোজগারে নামতে হয়েছে ভাইকেও। কিন্তু বাড়ির একরোখা মেয়েটার জেদ, পড়াশোনা সে করবেই।
কাটোয়ার সিঙ্গি পঞ্চায়েতের পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী আসমা খাতুন এরকমই। এ বছরের হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় সে পেয়েছে ৬৯৭। অঙ্ক এবং দুই বিজ্ঞানে ৯০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছে সে। পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ হোসেনের দাবি, বর্ধমান ও আশপাশের চারটে জেলা নিয়ে মাদ্রাসার আঞ্চলিক দফতর। পুরো অঞ্চলের মধ্যেই কৃতী ছাত্রী আসমা। |
বাড়ির উঠোনে আসমা।—নিজস্ব চিত্র। |
পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ে ভবিষ্যতে একজন ভাল শিক্ষিকা হতে চায় আসমা। খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির ঘরে বসে সে বলে, “সে ভাবে কোনও গৃহশিক্ষক ছিলেন না। মাদ্রাসার শিক্ষকেরাই আমায় সাহায্য করেছেন।” প্রধান শিক্ষকও বলেন, “মেধাবী ছাত্রী বলে প্রথম থেকেই এর দিকে বিশেষ নজর দিয়েছিলাম আমরা।” তিনভাই বোনের সংসারে আসমার দিদি টুম্পাও এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছে। কিন্তু ভাই বসিদের নাম মাদ্রাসার খাতাতে থাকলেও কেরালায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সে। মেয়ের ফলে খুশি বাবা নিজাম শেখ বলেন, “সব্জি বিক্রি করে সংসারের খরচাটাই সামলে উঠতে পারি না। মেয়েদের পড়াব কী ভাবে? ছেলেটার রোজগারের টাকাতেই মেয়েদের পড়ার খরচ চলছে।” এত প্রতিকূলতার মধ্যেও চোখে মুখে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা আসমার। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি বাবার কাঁধ শক্ত করে সংসারটাকেও সামলে দিতে চাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে। |