খেলার খবর
পুল বন্ধ, নোংরা পুকুরেই মহকুমা সাঁতার
সাঁতার প্রতিযোগিতা হল কচুরিপানা ও জঞ্জালে ভর্তি একটি পুকুরে। রবিবার ছিল বর্ধমানের আন্তঃমহকুমা সাঁতার প্রতিযোগিতা। তাতে ৫০ মিটারেরও কম দীর্ঘ একটি লেনে সাঁতরাল অনূর্ধ্ব ১৭ প্রতিযোগীরা। স্বাভাবিক ভাবেই ভাল মানের সাঁতার প্রতিযোগিতা দেখতে পেল না শহর। বর্ধমানের কল্পতরু ময়দানের সুইমিংপুলটি মাস কয়েক ধরেই বন্ধ। এক সাঁতারুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর জেরে এই পুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরে আর সেই পুল খোলেনি। জেলা সাঁতার সংস্থার দাবি, পুলিশের তদন্ত শেষ হয়নি বলে পুলটি চালু করা হয়নি। তবে বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরা সিজেএম আদালতে আবেদন করে পুলটি বন্ধ করিয়ে দিই। পরে পুলটি খোলার ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ আবেদন করেননি। পরে ওই সাঁতারুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তের ভার সিআইডির হাতে যায়। ফলে ওই পুল খোলার ব্যপারে আমাদের আর কিছুই করার নেই।”
বাঁশের পাটা বেঁধেই চলছে প্রতিযোগিতা।—নিজস্ব চিত্র।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার ভাতছালার একটি পুকুরে মহকুমা সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুকুরে বাঁশ-পাটা বাঁধা হয়েছিল। ঝুঁকি নিয়ে সেই পাটা থেকেই জলে ঝাঁপ দেন প্রতিযোগীরা। ছেলেদের বিভাগে ৭৩ পয়েন্ট পেয়ে বর্ধমান ও মেয়েদের বিভাগে ৫২ পয়েন্ট পেয়ে কালনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তবে পুল না খোলায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আন্তঃমহকুমা বিদ্যালয় সাঁতার প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন জাতীয় স্তরের প্রাক্তন সাঁতারু মিনা থাপা। তিনি বলেন, “পুকুরটাকে আরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা উচিত ছিল। তবে লেনের দৈর্ঘ্য কম ছিল বলে পরের আন্তঃজেলা পর্বে সাঁতারুদের সমস্যা হবে। অনেক চেষ্টা করেও তারা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে পারবে না।” জাতীয়স্তরের সাঁতারে পদকজয়ী সাঁতারু সায়নী দাসের বাবা তথা কালনার কোচ রাধেশ্যাম দাসের ক্ষোভ, “বর্ধমানের মত শহরে একটা আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুল বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। আর প্রতিযোগীদের সাঁতরাতে হচ্ছে পুকুরে!” কালনা থেকে আসা এক প্রতিযোগীর মা তনুশ্রী কোঙার বলেন, “ওই পুলে প্রতিযোগিতায় ছেলেমেয়েরা যা ফল করত, সেটাই ঠিক হোত। কিন্তু এই পুকুরে সাঁতারে যেমন এক দিকে বিপদের ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি সাঁতারু ঠিক কী কতটা সময় নিল তার হিসেবেও গরমিল থাকছে।” বর্ধমানের কোচ তথা এক প্রতিযোগীর বাবা তপন ঘোষ বা সাঁতারু সায়ন্তনী ঘোষ বলেন, “যে লেনে সাঁতার হলো তা দৈর্ঘে দু’ফুট কম। ফলে সাঁতারুরা কম সময়েই পেরোতে পারছে। সেই হিসেবই রাজ্য স্তরে পাঠানো হচ্ছে। ফলে আন্তঃজেলা সাঁতারে প্রতিযোগীরা তেমন ভাল ফল করতে নাও পারে।”
রয়েছে অন্যন্য সমস্যাও। চিত্তরঞ্জন থেকে প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে এসেছে সাঁতারু অর্ঘ্যদীপ দাস। তাঁর দাবি, “ওই পুকুরের জল পুলের জলের তুলনায় বেশ ভারি। সেই জল কেটে এগোতে সমস্যা হয়েছে অনেকেরই।” বর্ধমানের জাতীয়স্তরের সাঁতারু প্রত্যয় ভট্টাচার্যের অভিযোগ,“ভল্ট মেরে পুশ করতে গিয়েছি। দেখি ধাক্কা লেগে পাটা খুলে পড়ে গেল। দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’’ সাঁতারু শিবাজী মিত্রের অভিযোগ, “সাঁতরানোর সময়ে পুকুরে ভেসে থাকা ডাবের খোলা মাথায় এসে লাগল। তখন থেকেই ছন্দটাই নষ্ট হয়ে গেল।”
জেলা সাঁতার সংস্থার সম্পাদক অলোক চক্রবর্তী বলেছেন, “আমরা পুলটি খোলার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি। বাধ্য হয়ে পাড়ার পুকুরে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক অসুবিধা সত্ত্বেও তবে কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই আমরা প্রতিযোগিতা শেষ করতে পেরেছি।” সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, “এই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত ২৫ জনকে নিজেদের এলাকার পুকুরে নিয়মিত অনুশীলন করতে বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.