|
|
|
|
আজ ভারতে কেকিয়াং |
অনুপ্রবেশ হবে না, চিনের পাকা কথা চায় দিল্লি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সীমান্ত-সমস্যা তো ছিলই, সেই সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া চিনা সেনা-বাহিনীর অনুপ্রবেশ নিয়ে কাল থেকে সরগরম হতে চলেছে তিন দিনের ভারত-চিন শীষ বৈঠক।
দায়িত্ব পাওয়ার পর চিনের নয়া প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের প্রথম বিদেশ সফর ভারতেই। এই পদক্ষেপকে আজ স্বাগত জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে একাধিক চুক্তি, সাংস্কৃতিক বিনিময়, আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির মতো বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে। কিন্তু কেকিয়াংয়ের বিমান দিল্লির রানওয়ে ছোঁয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই একটা কথা স্পষ্ট, সীমান্ত-
লি কেকিয়াং |
জটিলতাই দু’দেশের আলোচনার মুখ্য বিষয় হতে চলেছে।
দশ দিন আগে চিন সফরে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ সে দেশের নেতৃত্বকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনাদের অনুপ্রবেশ ও ২০ দিন ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকার ব্যাখ্যা দিতে হবে। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্য ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কাল নৈশভোজে কেকিয়াংয়ের মুখোমুখি হবেন মনমোহন সিংহ। তখন প্রসঙ্গটি তোলা হবে। আজ এই ইঙ্গিত দেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন। জানান, “দু’দেশের মধ্যে আস্থা বাড়ানো এবং একে অন্যের স্পর্শকাতরতা বুঝে ওঠাটাই এই সফরের মূল লক্ষ্য।”
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, কেকিয়াংয়ের আসন্ন সফরে কোনও সীমান্ত-চুক্তি হবে না। দু’মাস আগে নয়াদিল্লিকে ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে একটি নতুন পদ্ধতির (‘বর্ডার ডিফেন্স কো-অপারেশন প্রপোজাল’ বা সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা) প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। কিন্তু তা মানতে নারাজ ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাদের বক্তব্য, চিনের শর্তে ওই খসড়া মেনে চুক্তি করলে ভারতের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। সীমান্তে টহলদারির বিষয়ে সমস্ত তথ্য জানাতে হবে বেজিংকে, যেটা আদৌ কাঙ্ক্ষিত নয়। আজ চিন-বিষয়ক যুগ্ম বিদেশসচিব গৌতম বোম্বাওয়ালে জানান, “গোটা বিষয়টি নিয়ে অপেক্ষা করা এবং নজর রাখার নীতি নেওয়া হয়েছে।” তাঁর কথাতেই স্পষ্ট, এখনই বেজিংকে এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছে না দিল্লি।
ভবিষ্যতে যাতে সেনা-অনুপ্রবেশের মতো ঘটনা আর না ঘটে, সে ব্যাপারে চিনের কাছে প্রতিশ্রুতি আদায় করাও ভারতের লক্ষ্য। যৌথ বিবৃতিতে যাতে বিষয়টির উল্লেখ থাকে, তার চেষ্টাও করছেন কূটনৈতিক কর্তারা। বেজিং চাইছে ভারত-চিন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নির্ণয়ে নিজেদের শর্তমাফিক কথা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কেকিয়াংয়ের সফরের ঠিক আগে বেজিং সূত্রে বলা হচ্ছে, অন্য সব দেশের সঙ্গে তাদের সীমান্ত সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাকি রয়েছে শুধু ভারত।
তবে নয়াদিল্লি চাইছে সীমান্ত এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে কথার পাশাপাশি এই সফর থেকে যতটা সম্ভব বাণিজ্যিক ফায়দা তুলে নিতে। বিদেশমন্ত্রী সম্প্রতি জানিয়েছেন, “সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা এবং ভারত-চিন অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এই দু’টি পৃথক সড়ক ধরেই আমরা হাঁটতে চাইছি।” ঘটনা হল, দু’দেশের মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে এ বার যথেষ্টই মরিয়া ভারত। আকবরুদ্দিনের কথায়, “আমরা চাইছি ভারতীয় সংস্থাগুলি আরও বেশি করে চিনের বাজার ধরুক। অপেক্ষা না করে এ ব্যাপারে দ্রুত ফলাফল দেখতে চাইছি আমরা।”
|
পুরনো খবর: সীমান্তকে অগ্রাধিকার দিতেই চিনা অনুপ্রবেশ কৌশল |
|
|
|
|
|