নার্সারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই দু’জনের বন্ধুত্ব। প্রায় সর্বক্ষণই তারা একসঙ্গে থাকত। বাড়িও একই পাড়ায়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একটি বেসরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়ার পর নবম শ্রেণিতে দুজনেই ভর্তি হয় একই মাদ্রাসায়। তবে পড়াশুনোয় একে অপরকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে রাজি ছিল না। শুক্রবার এই দুই বান্ধবীকে নিয়ে গর্বিত রতুয়া।
এ দিন মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় (মাধ্যমিক সমতুল) মেয়েদের মধ্যে নজরকাড়া ফল করেছে তাদেরই একজন। ৭২৮ নম্বর পেয়েছে রোশনারা খাতুন। আর রোশনারার বন্ধু হাবিবা সিদ্দিকির প্রাপ্ত নম্বর ৭২২। তবে রেজাল্টের পর আক্ষেপ নেই দু’জনের। চিড় ধরেনি বন্ধুত্বেরও। মালদহের রতুয়ার ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার থেকে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিল দু’জনে। শুধু রোশনারা ও হাবিবাই নয়, উল্লেখযোগ্য ফল করেছে এই মাদ্রাসারই ছাত্র আবুবক্কর সিদ্দিক। তিন ছাত্রছাত্রীর সাফল্যে এলাকায় খুশির আবহ। |
ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাদ বলেন, “তিনজন বরাবরই মেধাবী ছিল। ওদের ফলাফলে আমরা গর্বিত, উচ্ছসিত। রোশনারা ও হাবিবাকে দেখে অন্যরাও অনুপ্রানিত হবে। কী ভাবে একে অন্যের প্রতিযোগী হয়েও বন্ধু হয়ে থাকা যায় তা ওরা দেখিয়েছে।” রোশনারার বাবা তথা ওই মাদ্রাসারই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ গোলাম রসুল। তার সাত মেয়ে ও তিনছেলের মধ্যে রোশনারা সর্বকনিষ্ঠ। প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পড়ত রোশনারা। সে শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখে। পড়াতে চায় কলা বিভাগ। কিন্তু হাবিবার ইচ্ছে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করে চিকিৎসক হওয়ার। পথ আলাদা হলেও বন্ধুত্বে যে ছেদ পড়বে না তা জানিয়ে দিয়েছে দুজনেই। রোশনারা ও হাবিবা জানায়, গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের উদ্দেশ্য। তা সে শিক্ষক হয়েই হোক আর চিকিৎসক হয়েই হোক। হাবিবার বাবা-মা চাকরিজীবী না হলেও দুজনেই শিক্ষিত। বাবা সফিকুল আলম কৃষিকাজ করেন। মা তাবিকুল নাহারুন এমএ পাশ। ৩ ভাইবোনের মধ্যে বড় হাবিবা। ভাল ফল করেছে চাঁচল মহকুমার দুটি মাদ্রাসার আরও দুই ছাত্রছাত্রী রতুয়ার ভগবানপুর হাই মাদ্রাসার সায়েদাতুন্নেশা ও চাঁচলের নৈকান্দা হাই মাদ্রাসার ছাত্র মহম্মদ মতিউর ৭১২ নম্বর পেয়েছে। |