পঞ্চায়েত আর কিছু পুরসভার নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে ভোটের বাজনা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলেও। সাত বছর পরে হচ্ছে ওই নির্বাচন। আর তা নিয়েই তেতে রয়েছে রাজ্যের সরকারি চিকিৎসক মহল। যাতে কোনও কারচুপি না-হয়, সেই জন্য এ বারেই প্রথম রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ভোটারদের ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে রেজিস্টার্ড ডাকে।
কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার তথা রিটার্নিং অফিসার দিলীপ ঘোষ বলেন, “এ ভাবে ব্যালট পেপার পাঠানোটাই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। আগে ব্যালট পাঠানো হত আন্ডার সার্টিফিকেট অফ পোস্টিং-এর মাধ্যমে। কিন্তু ব্যালট পাচ্ছেন না বলে বহু চিকিৎসক অভিযোগ করতেন। তাই জিপিও-র সঙ্গে আলোচনা করে ব্যালট পাঠানো হচ্ছে রেজিস্টার্ড ডাকে।”
কাউন্সিলের ভোট হওয়ার কথা পাঁচ বছর অন্তর। কিন্তু সাত বছর ভোট হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে পুরনো কমিটি ভেঙে অ্যাড-হক কমিটি গড়ে দেয়। জানানো হয়েছিল, সর্বাধিক তিন বছরের মধ্যে ভোট করতে হবে। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই প্রবাসী চিকিৎসক কুণাল সাহা দ্রুত ভোট চেয়ে হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট ছ’মাসের মধ্যে ভোট শেষ করতে বলে। আগামী ১৫ জুলাই সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাজ নিয়ে বাম আমল থেকেই অভিযোগ প্রচুর। বছরের পর বছর অভিযোগের নিষ্পত্তি না-হওয়া, স্বজনপোষণ-সহ সবই ছিল তালিকায়। তৃণমূল আমলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। সম্প্রতি দু’টি অভিযোগের নিষ্পত্তি নিয়ে বড়সড় বিতর্কের মুখে পড়ে কাউন্সিল। প্রথমটি বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির প্রাক্তন অধিকর্তা শ্যামাপদ গড়াইয়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ। দ্বিতীয়টি এসএসকেএমের নবজাতক বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অরুণ সিংহের বিরুদ্ধে কাউন্সিল-সভাপতি ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ। কোনওটিরই নিষ্পত্তি হয়নি। প্রথম ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শ্যামাপদবাবুর বিরোধ আছে। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে কাউন্সিল-সভাপতির সঙ্গে অরুণবাবুর বনিবনার অভাব। দু’টি ক্ষেত্রেই কাউন্সিলের বিরুদ্ধে শত্রুমনোভাব পোষণের অভিযোগ উঠেছিল। প্রার্থী রেজাউল করিম বলেন, “বাম আমলে ভোটের নামে প্রহসন হত। এই আমলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। এ বার তাই সুষ্ঠু নির্বাচনটা খুব জরুরি।” |