|
|
|
|
সংসারে ফেরালেন স্বামী |
পরিচয় ভাঁড়িয়ে ফের বিয়ে বধূর
নিলয় দাস • ফালাকাটা
সীমান্ত মৈত্র • বনগাঁ |
শ্বশুরবাড়িতে হঠাৎ হাজির নতুন বউয়ের স্বামী ও পুত্র। বিয়ের তিন দিন পরে জলপাইগুড়ির ফালাকাটার বাবুপাড়ার বাড়িতে সেই মহিলার বর ও তাঁর পরিবার তখনই জানতে পারেন, নতুন বউ বিবাহিতা। স্বামীর সঙ্গে আইন মাফিক বিচ্ছেদ হয়নি। সেই মহিলার দাবি, স্বামী তাঁর উপরে অত্যাচার করতেন বলেই তিনি নাম ও পরিচয় ভাঁড়িয়ে নতুন বিয়ে করেছেন। নতুন জীবনে পা রাখার আগে আট বছরের ছেলেকেও সঙ্গে আনেননি।
ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে। বছর দশেক আগে দেবনাথ পাড়ায় তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী দমদমের একটি সেলুনে কাজ করেন। সপ্তাহে দু’এক দিন বাড়ি ফেরেন। ছেলেকে নিয়ে মহিলা শ্বশুরবাড়ির দোতলায় একাই থাকতেন। শ্বশুর-শাশুড়ি জানান, ছেলে বা বৌমার সঙ্গে অশান্তি হয়নি। দিন কয়েক আগে তিনি শাশুড়িকে বলে গিয়েছিলেন বাপের বাড়িতে যাচ্ছেন। নতুন শাঁখা পরে ফিরবেন। কিন্তু রাতেও তিনি বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্বামী শ্বশুরবাড়িতে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, বউ সেখানে যাননি। নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় থানায়।
সেই মহিলাই সম্প্রতি তাঁর বাপের বাড়ির এক আত্মীয়কে ফোন করে তিনি ‘ভাল রয়েছেন’ বলার পরেই রহস্যের জট খোলে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে মোবাইল নম্বর থেকে মহিলা ফোন করেছিলেন, তা দেখে পুলিশ জানতে পারে নম্বরটি ফালাকাটার।
সেই মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহিলার স্বামী, পুত্র-সহ পরিবারের লোকজন ফালাকাটায় ওই বাড়িতে যান। সঙ্গে পুলিশ। সব শুনে বাড়িতে তখন শোকের আবহ। তিন দিনেই নতুন বউকে বেশ ভালবেসে ফেলেছিল তাঁর পরিবার।
ফালাকাটার ওই যুবক জানান, প্রায় মাস দু’য়েক আগে তাঁদের সম্পর্কের সূচনা। মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে মিসড্ কল দেখে ফোন করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “কথা বলার ভঙ্গি শুনেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।” বিয়ের প্রস্তাবও দেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ওই যুবক। কিন্তু ওই মহিলা তাঁকে তখন জানান, বাপের বাড়ি জানলে বিয়ে দেবে না। সেই মতো ৫ মে শিয়ালদহে যান ওই যুবক। তাঁকে নিয়ে যান হাবড়াতে এক আত্মীয়ের বাড়িও। রবিবার তাঁরা ফালাকাটায় ফেরেন। সোমবার মন্দিরে মালাবদল করে বিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার হয় বউভাত।
কেন বউমা সম্পর্কে ভাল করে খোঁজ নিলেন না? যুবকের মা জানান, “মেয়েটির রূপ ও আচরণে মুগ্ধ হয়ে ওর কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম।”
মহিলাকে শুক্রবার নিয়ে আসা হয়েছে গোপালনগরে। আপাতত তিনি বাপের বাড়িতে থাকবেন। শ্বশুর-শাশুড়ি চান, নাতির মুখ চেয়ে বৌমা দ্রুত বাড়ি ফিরুক। মহিলার স্বামী বলেন, “স্ত্রী যাই করুন, সসম্মানেই তিনি আমার সংসারে থাকবেন।” |
|
|
|
|
|