খোলনলচে বদলে শুক্রবার নতুন বস্ত্রনীতির খসড়া প্রকাশ করল রাজ্য। রাজ্যে বস্ত্রশিল্পের হারানো স্বর্ণযুগ ফেরাতে এই প্রথম সরাসরি আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে তাতে। মহিলা, তফসিলি জাতি-উপজাতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিল্পোদ্যোগীদের বাড়তি অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব হয়েছে এই খসড়ায়।
নতুন বস্ত্রনীতি তৈরির কথা গত সপ্তাহেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মহাকরণে শিল্প-বিষয়ক কোর কমিটির বৈঠকের পরে তিনি জানান, রাজ্যের নতুন শিল্পনীতি এবং বস্ত্রনীতির খসড়া দু’সপ্তাহের মধ্যে ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। কার্যত এক সপ্তাহের মধ্যেই শুক্রবার বস্ত্রনীতির খসড়া ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্যও পৃথক নীতির খসড়া প্রকাশ করেছে রাজ্য। ৩ জুলাই কোর কমিটির পরবর্তী বৈঠকে বস্ত্র ও ক্ষুদ্রশিল্প নীতি চূড়ান্ত হতে পারে।
মহাকরণের খবর, বাম আমলে ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের অঙ্গ হিসাবে সরকারের আর্থিক অনুদান পেতেন বস্ত্রশিল্পের বিনিয়োগকারীরা। এ বার শুধু বস্ত্রশিল্পের জন্যই পৃথক অনুদান প্রকল্প চালু করবে রাজ্য। রাজ্য চায় বস্ত্র ও ছোট শিল্পে পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ প্রশিক্ষণ পেয়ে শিল্পদ্যোগী হোক। সুতোর সংগ্রহ ও বণ্টনকে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে ‘স্পিনফেড’ নামে একটি ফেডারেশন তৈরির কথা ভাবছে রাজ্য। সেই সঙ্গে রাজ্যের রেশমশিল্পকে চাঙ্গা করতে ‘রেশমশ্রী’ নামে নতুন একটি উন্নয়ন নিগম তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় কী রয়েছে?
বলা হয়েছে, উভয় শিল্পের ক্ষেত্রেই মহিলা, তফসিলি জাতি-উপজাতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন শিল্পে চলতি ভর্তুকির উপর অতিরিক্ত ২০% ভর্তুকি দেওয়া হবে। রাজ্যের অনগ্রসর জেলাগুলিতে ছোট শিল্প করলে মিলবে বাড়তি ভর্তুকি। বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও পরিবেশ সংরক্ষণের জন্যও মিলবে বিশেষ আর্থিক সুবিধা। আবার, চালু শিল্পগুলির আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণেও আর্থিক অনুদান মিলবে।
রাজ্য সরকারের নতুন বস্ত্রনীতির লক্ষ্য, আগামী দশ বছরে উৎপাদন বাড়িয়ে ১০% করা। বলা হয়েছে, উভয় শিল্পের ক্ষেত্রেই বেসরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি শিল্পপার্ক, কমন ফেসিলিটি সেন্টার ইত্যাদি তৈরির জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। দুই শিল্পের ক্ষেত্রেই উন্নয়নের কাজ তদারকিতে গড়া হবে পৃথক টাস্ক ফোর্স। |