নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পুকুরের ‘গার্ডওয়াল’ তৈরি করা হচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ গোতিষ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের দীর্ঘশোঁয়া গ্রামের বাসিন্দারা। শুক্রবার ভেঙে পড়ে একটি পুকুরের ‘গার্ডওয়াল’। বাঁধ ভেঙে যায় গ্রামবাসীদের। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তালা মেরে দেন গোতিষ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে একটি প্রাথমিক স্কুলে আটকে তালা মেরে দেন তাঁরা। দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকার পর মঙ্গলকোটের যুগ্ম বিডিও সন্দীপ সিংহ রায় ওই গ্রামে গিয়ে সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে গ্রামবাসীরা শান্ত হন। এরপর পঞ্চায়েতকর্মীদের উদ্ধার করেন সন্দীপবাবু।
গ্রামবাসীরা জানান, এ দিন গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের কাছে দাসেদাগোড়ের পুকুরে ১০০ দিনের কাজ চলছিল। সেই সময়ে গার্ডওয়ালের ৭০ ফুট অংশ ভেঙে পড়ে। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। গ্রামের পাশেই পঞ্চায়েত দফতর। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক ‘গার্ডওয়াল’ দেখতে দীর্ঘশোঁয়া গ্রামে গেলে বাসিন্দারা তাঁকে স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা দিয়ে গ্রামের ভিতর ৫টি পুকুরের জন মোট ৩০০ মিটারের ‘গার্ডওয়াল’ ও মোরাম রাস্তা নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘গার্ডওয়াল’ তৈরির সময়েই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে বলে পঞ্চায়েতে অভিযোগ করা হয়েছিল। গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ মাঝি, নব মাঝিদের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত আমাদের কথা শুনছে না দেখে আমরা মোরাম রাস্তা তৈরির কাজ আটকে দিয়েছি। সাত মাসের মধ্যে ‘গার্ডওয়াল’টিও ভেঙে পড়ল। এখন বোঝা গেল, আমাদের অভিযোগ কতটা সত্যি ছিল”
সিপিএম পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের প্রধান আনারুল শেখকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য সৈয়দ বদরুদ্দোজার অভিযোগ, “খাতায় কলমে পঞ্চায়েত আমাদের হলেও বাস্তবটা অন্য। পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসীদের বাদ দিয়ে কাজের নামে লুঠ চলেছে। গ্রামের মানুষ এর বিরুদ্ধে শুক্রবার মুখ খুলেছেন” তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। এ দিন গ্রামবাসীদের ক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান যুগ্ম বিডিও সন্দীপ সিংহ রায়। তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শান্ত হন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলকোটের বিডিও সুশান্ত মণ্ডল বলেন, “আশ্বাস পাওয়ার পরেই গ্রামবাসীরা পঞ্চায়েতকর্মীদের ছেড়ে দেন। আমরা তদন্ত করছি।” |