পরীক্ষা দিতে গিয়ে তাঁদের কলেজে ভাঙচুর করায় ট্রেনে কাটোয়া কলেজের কিছু ছাত্রকে পাল্টা মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কালনা কলেজের এক দল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। শুক্রবার কাটোয়া কলেজের ছাত্রেরা কালনা কলেজে পার্ট ১ পাসের পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই গোলমাল বাধে বলে জানা গিয়েছে।
কালনা কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সংস্কৃত প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। কাটোয়া এবং পূর্বস্থলীর ছাত্রদের আসন পড়েছিল কালনা কলেজে। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪০৫, তার মধ্যে ১১০০ জনই ছিল কাটোয়া কলেজের। বিকেলে কলেজ কর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়, পরীক্ষা শেষ হওয়ায় পরেই কাটোয়া কলেজের এক দল ছাত্র ভাঙচুর চালায়। তারা কলেজের নোটিশ বোর্ড, দেওয়াল ম্যাগাজিনের বাক্স, জলের পাত্র ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। কর্মীরাই জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য চারজন পুলিশ কর্মী থাকলেও তাঁরাও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। কলেজ কর্মীদের দাবি, বৃহস্পতিবার থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। অভিভাবকদের কলেজ প্রাঙ্গনের ভিতরে ঢুকতে না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল কাটোয়া কলেজের ছাত্ররা। পরে পুলিশ কাছেই একটি সাইকেল স্ট্যান্ডে অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা করে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এছাড়া পরীক্ষার শুরু থেকেই কাটোয়া ও পূর্বস্থলী কলেজের কিছু ছাত্র টোকাটুকি করছিল বলেও কর্মীরা জানান। তাঁদের দাবি, টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় প্রথম থেকেই কাটোয়ার কিছু ছেলে ক্ষিপ্ত ছিল। তারাই পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে ভাঙচুর চালায়। |
তবে কাটোয়া কলেজ আর কালনা কলেজের ছাত্রজের মধ্যে বচসা নতুন নয়। গত কয়েকবছর ধরেই গোলমাল, ভাঙচুরের নানা ঘটনা ঘটছে। কালনা কলেজের অধ্যক্ষ রাজীব মুখোপাধ্যায়ের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, “বাইরে আছি। এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”
এ দিনই আবার ফেরার পথে লোকাল ট্রেনে কাটোয়া কলেজের এক দল ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ট্রেনের কামরায় থাকা রহিম মল্লিক নামে এক যাত্রী জানান, পূর্বস্থলী স্টেশন থেকে কিছু ছাত্র কামরায় ওঠে। কাটোয়ার ছাত্রদের মারধর করার পাশাপাশি তারা হুমকি দিয়ে বলে, আমাদের কলেজে যারা ভাঙচুর করেছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। পরের দিন দেখে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। এ নিয়ে ট্রেনে ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। বিভিন্ন স্টেশনে কামরা বদলে তারা কাটোয়ায় বাড়ি ফেরে বলে জানা গিয়েছে। রহিম মল্লিক আরও জানান, কাটোয়া কলেজের কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ট্রেনে অন্য ছাত্রদের ও যাত্রীদের গায়ে জল গিয়ে উত্যক্ত করার অভিযোগও উঠেছিল।
কাটোয়া কলেজের অধ্যক্ষ অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কালনা কলেজে ভাঙচুরের ঘটনাটি তিনি জানেন না। তবে বাড়ি ফেরার সময়ে কাটোয়া কলেজের কিছু ছাত্রের উপর কালনা কলেজ ও পূর্বস্থলীর ছাত্র চড়াও হয়। আতঙ্কিত ছাত্ররা কাটোয়া জিআরপিতে অভিযোগও দায়ের করেছে। বারবার কাটোয়া কলেজের ছাত্রদের ভাঙচুরের ঘটনায় কেন নাম জড়াচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “গত বার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছিল। অভিযুক্ত ছাত্রদের চিহ্নিত করা হয়েছিল। অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি জানানোও হয়েছিল। এ বারও খোঁজ নিয়ে দেখব।” |