বেহাল রাস্তা ঠিক করতে নিজেরাই হাত লাগালেন গ্রামবাসীরা। মানকর পঞ্চায়েতের মাড়ো গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামের রাস্তা ঠিক করার জন্য বহুবার পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। অথচ বর্ষার আগে রাস্তা না ঠিক করা হলে সমস্যায় পড়বেন তাঁরা। তাই নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা ঠিক করতে উদ্যোগী হলেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ,পঞ্চায়েত তাঁদের গ্রামে কোনওরকম উন্নয়নমূলক কাজ করেনি। রাস্তা থেকে শুরু করে নিকাশি, সব দিক থেকেই তাঁদের গ্রাম অবহেলিত। রাস্তা এতটাই খারাপ যে একটু বৃষ্টি হলেই আর গ্রামে ঢোকা যায় না। শীত বা বর্ষা, সবসময়েই গ্রামের রাস্তার উপরে জল দাঁড়িয়ে থাকে। তার মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। এই অবস্থায় গ্রামবাসীরা বারবার পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন গ্রামের রাস্তাটি কংক্রিটের বানানোর জন্য। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। গ্রামের বাসিন্দা বাবলা ভট্টাচার্য, পরেশ নাথ, সোনু অধিকারীরা জানান, বেশ কিছুদিন আগে একবার মোরাম দিয়েছিল পঞ্চায়েত। |
কিন্তু তা পরিমাণে এতটাই কম যে গোটা গ্রামের রাস্তায় ঠিক ভাবে মোরাম ফেলাই আর সম্ভব হয়নি। তাঁরা আরও জানান, রাস্তার পাশে কোনও পাকা নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা নর্দমার জল রাস্তার উপরেই দাঁড়িয়ে থাকে। তাই সবসময়েই কাদা। গ্রামবাসীরা জানান, শুধু যে মাড়ো গ্রামের লোকেরাই যে এই রাস্তা ব্যবহার করেন, তা নয়। আশপাশের আরও বেশ কিছু গ্রামের মানুষ মাড়োর গ্রামের উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। ফলে জিটি রোড থেকে মাড়ো গ্রাম পর্যন্ত গোটা রাস্তাটি সংস্কার করতে শুরু করেছেন।
কিন্তু কীভাবে সম্ভব হবে কাজ?
এই প্রসঙ্গে গ্রামের তৃণমূল নেতা বাপ্পাদিত্য রায় জানান, গ্রামবাসীরাই সাধ্যমতো চাঁদা দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করছেন। তিনি জানান, ডিপিএল থেকে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ডাম্পারে করে আনা হচ্ছে। তার জন্য ডাম্পার পিছু কিছু টাকাও লাগছে। তারপর সেইসব ‘ফ্লাই অ্যাশ’ গোটা রাস্তাতেই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই কাজে গ্রামের বেশ কিছু মানুষও হাত লাগিয়েছেন। বাপ্পাবাবু বলেন, “আমাদের সাধ্য সীমিত। জানি না, কতটা কাজ করতে পারব।” গ্রামের বাসিন্দা নরেশ কোনার বলেন, “এমনিতেই সারাবছর আমাদের গ্রামে রাস্তার উপর জল দাঁড়িয়ে থাকে। আর বর্ষাকালে তো গ্রামে ঢোকাই যায় না। তাই এবার আমরা বর্ষা শুরুর আগেই উদ্যোগী হয়েছি।” গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, তাঁদের আশপাশের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামের রাস্তাই কংক্রিটের হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র তাঁদের গ্রামের রাস্তার কোনও উন্নতি হয়নি। কেন তাঁদের গ্রামের রাস্তার হাল ফেরাতে পঞ্চায়েত বা ব্লক প্রশাসন উদাসীন তা গ্রামবাসীরা বুঝতে পারছেন না।
মাড়ো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুরজিৎ বাউড়ি বলেন, “জিটি রোড থেকে গ্রামে ঢোকার রাস্তার দেড় কিলোমিটার মিলিটারির জায়গা। তাই সেখানে কাজ করায় কিছু সমস্যা রয়েছে।” তবে গ্রামের ভিতরের রাস্তার কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস তাঁর। কিন্তু কত দিনের মধ্যে তা করা হবে, তা নিয়ে কিছু জানাননি তিনি। |