ফের হুগলিতে এক অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্ণধারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল।
বৃহস্পতিবার ভোরে মগরার কালীতলা এলাকার বাসিন্দা অসীম বেরা (৪৪) নামে ওই ব্যক্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাড়ির উল্টো দিকে তাঁর গ্যারাজের সামনে থেকে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সারদা-কাণ্ডের জেরে কারবারে মন্দা এবং লগ্নিকারীদের টাকা ফেরতের চাপ বাড়ায় প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে কীটনাশক খেয়ে তিনি আত্মঘাতী হন। তবে, এ নিয়ে তাঁর বাড়ির লোকজন কোনও কথা বলতে চাননি।
হুগলির ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) দেবশ্রী স্যানাল বলেন, “পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। আপাতত এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।” রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়নি।
দিন কয়েক আগে চুঁচুড়ার বিশালাক্ষীতলার বাসিন্দা, একটি লগ্নিকারী সংস্থার কর্ণধার জয়ন্ত সরকারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তাঁকে অবশ্য খুনের অভিযোগে সংস্থারই এক এজেন্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |
এই নিয়ে সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পরে হুগলিতে দুই লগ্নি সংস্থার কর্ণধারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসীমবাবুর লগ্নি সংস্থার নাম ‘এমকো প্রজেক্ট লিমিটেড’। হুগলিতে ওই সংস্থার তেমন ব্যবসায়িক প্রসার ছিল না। সংস্থার কারবার ছিল মূলত মালদহ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ায়। বিলাসবহুল গাড়িতে প্রায়ই অসীমবাবু ওই তিন জেলায় যেতেন। বছর দু’য়েক আগে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড় লাগোয়া ‘আপনজন মার্কেটে’ একটি অফিস খোলেন তিনি। মাঝেমধ্যেই সেখানে আমানতকারী এবং এজেন্টরা আসতেন। রাত পর্যন্ত সেখানে বৈঠক চলত। বুধবার অফিসটি নিজের বাড়িতে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেন অসীমবাবু। সঙ্গে একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়। যদিও মোবাইলটি বৃহস্পতিবার বন্ধ ছিল।
অকৃতদার অসীমবাবু বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকতেন। প্রতিদিন প্রাতর্ভ্রমণে বের হতেন। উল্টো দিকেই অসীমবাবুর দিদি উমা মণ্ডলের বাড়ি। প্রাতর্ভ্রমণে উমাদেবীও অসীমবাবুর সঙ্গী হতেন। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ উমাদেবীই প্রথম ভাইকে গ্যারাজের সামনে পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর কথায়, “ওর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। মুখ থুবড়ে পড়েছিল। লোকজনকে আমিই ডাকি।”
তবে, ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি। কয়েক জন প্রতিবেশী জানান, কয়েক দিন ধরে মনমরা ছিলেন অসীমবাবু। তবে, বাড়িতে কোনও আমানতকারীকে আসতে দেখেননি তাঁরা। কোনও গণ্ডগোলও হয়নি। |