|
|
|
|
রেল-সিবিআই |
জালে পড়ে কাদা ছুড়ছে কংগ্রেস, পাল্টা তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দুর্নীতির জালে নিজেরা জড়িয়ে পড়ে কংগ্রেস এখন বিরোধীদের জড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কালি ছেটাতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও। ঘুষ-কাণ্ডের জেরে রেলে সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ায় এ ভাবেই কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটছে তৃণমূল।
রেলে ভাল পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর ভাগ্নের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় পদত্যাগ করতে হয়েছে রেলমন্ত্রী পবন বনশলকে। গত চার বছরে রেলে যাবতীয় উচ্চ পদস্থ নিয়োগই সিবিআই এখন খতিয়ে দেখছে। যার মধ্যে পড়ছে রেল মন্ত্রকে তৃণমূল জমানাও। এই প্রেক্ষিতেই তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেস রেল মন্ত্রক হাতে পেয়েছিল মাত্র মাসআষ্টেক আগে। এর মধ্যেই স্বজনপোষণ, দুর্নীতির একের পর এক কঙ্কাল ঝুলি থেকে বেরোতে শুরু করেছে! বিপাকে পড়ে নজর ঘোরানোর জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআইকে এগিয়ে দিয়ে তৃণমূলের ভাবমূর্তিতে দাগ লাগাতে চাইছে।
কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জের সুরেই রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “রেল মন্ত্রকে আমাদের রেকর্ড সকলের সামনেই আছে। সিবিআই আমাদের রেকর্ড এবং জনসমক্ষে আমাদের যাবতীয় কাজ খতিয়ে দেখুক। তৃণমূল তো খোলা বইয়ের মতো!” মার্কিন উপমা ব্যবহার করে ডেরেকের মন্তব্য, “জন-প্রশাসক হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্নাতীত সততার অধিকারী। কংগ্রেসের রবার-ব্যারন সংস্কৃতির সঙ্গে তাঁকে মেলানো যায় না!” টাকার বিনিময়ে লোক ঢোকানো, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে কাজ হাসিল, জাতীয় সম্পদকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানো এই জাতীয় কাজ যে মমতার হাত দিয়ে হয় না, তা-ই বোঝাতে চেয়েছেন ডেরেক।
সিবিআই-প্রশ্নে মমতার কেন্দ্র-বিরোধী জেহাদের সঙ্গে এখন সহমর্মিতা দেখাচ্ছে বিজেপিও। বিজেপি সূত্রের খবর, দু’দলের নেতৃত্বের মধ্যে অন্তরালে বার্তা বিনিময়ও চলছে। নিজেদের দোষ ঢাকতে কংগ্রেস যে ভাবে বিজেপি-র বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের মাথার উপরে সিবিআই এবং অন্যান্য তদন্তের খাঁড়া ঝোলাতে চাইছে এবং তা নিয়ে আবার হইচই করছে, তার বিরুদ্ধে এখন সরব অরুণ জেটলিরা। কংগ্রেস-সিপিএম আঁতাঁতের অভিযোগ এনে তৃণমূল নেত্রীও একই যুক্তিতে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করছেন। সারদা-কাণ্ডের সময় যার তীব্রতা বেড়েছে। রাজনৈতিক যুক্তি মিলে যাওয়ায় তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের সুরও মিলছে।
তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, ২০০৯ থেকে তিন বছরের কিছু বেশি সময় রেল মন্ত্রক নিজেদের হাতে থাকাকালীন মমতা স্বচ্ছতা এবং সততায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছিলেন। তৃণমূল নেত্রীর নিজের রাজনৈতিক জীবন যে ভাবে সন্দেহের ঊর্ধ্বে, তাঁর রেল-জমানাও তেমনই সিবিআই বা যে কোনও সংস্থার তদন্তে নিষ্কলঙ্ক প্রমাণিত হওয়ার যোগ্য। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ওই সময়ে রেলে গুরুত্বপূর্ণ পদে সব নিয়োগই এই সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটিতে অনুমোদিত হত। সেই কমিটির মাথায় আছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। রেলমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কমিটির সদস্য। এমনকী, রেলওয়ে বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন এই কমিটিই বেছে নিয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের আরও দাবি, গুরুত্বপূর্ণ সব নিয়োগই পরবর্তী কালে জাতীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের ছাড়পত্র পেয়েছিল। ক্যাবিনেট কমিটির বেছে দেওয়া তালিকা থেকেই চূড়ান্ত নিয়োগ হত। সেখানে পক্ষপাতিত্ব বা আড়ালে কোনও খেলার প্রশ্নই ছিল না।
তৃণমূলের পাল্টা আক্রমণ দেখে এক কংগ্রেস নেতার মন্তব্য, “সিবিআই তো এখনও ওই জমানার কাজকর্ম নিয়ে কিছু করেইনি। তার আগেই ওঁদের এত চিন্তা কীসের?”
|
পুরনো খবর: মমতা-জমানায় রেলে নিয়োগ নিয়েও তদন্ত করবে সিবিআই |
|
|
|
|
|